অগোছালো বইয়ের তাকে, একদম নীচের দিকে,
পুরোনো ডাইরিটা যত্নে রাখা।
শুরুর থেকে শেষ, সাধারন থেকে বিশেষ
সবকিছু আজও লেখা।
হয়ত ধুল জমেছে, একটু বা কদর কমেছে
তবুও অনেক স্মৃতির নিশান।
বিষ্ময়ে হাতে নিতেই, দুএক পাতা পড়তেই
মন হয়ে ওঠে আনচান।
মনে পড়ে যায়, বিগত বছর আড়াই।
তোমায় প্রথম দেখার দিনটা,
প্রথম দিনের পরিচয় পড়তে গিয়ে হয়
হারিয়ে ফেলি মনটা।
রোজ পড়ার ফাঁকে তোমায় একটু দেখে
কত শান্তি পেয়েছি।
"ভালবাসি তোমায়!" কিভাবে যে জানায়,
শুধুই সুযোগ খুঁজেছি।
স্কুলের পুজোতে দেখেছি শাড়িতে
তোমার রূপের ঝলক।
বিষম খেয়েছি স্তব্ধ হয়েছি
পড়েনি চোখের পলক।
বলে চলেছ তুমি, নির্বাক শ্রোতা আমি।
চেয়ে আছি তোমার পানে,
আনমনা হয়ে আরও কাছে গিয়ে
বলেছি,"ভালবাসি!" ওই ক্ষণে।
মুখ নীচু করে মৃদু লজ্জিত স্বরে,
উত্তর দিয়েছিলে আমায়,
"থাকতে এই প্রাণ রাখব প্রেমের মান,
কথা দিচ্ছি তোমায়।"
আমায় কাছে টেনে আলতো চুম্বনে
বলেছ, "আমিও ভালবাসি।
তুমি সাথ দিলে নরকবাস পেলে
তাতেই আমি খুশি।"
শুনে ওই কথা, বলেছি, " হে বিধাতা!
অশেষ ধন্যবাদ।
তোমার কৃপায় ওর সঙ্গ পায়
দিও আশির্বাদ।"
মন্ডপে গিয়ে অঞ্জলি দিয়ে
লিখেছি নতুন অধ্যয়,
দুজন এসে একসাথে মিশে
হয়েছে প্রেমের উদয়।
সেই ছিল সময় কিছু লাজুক ভয়
লুকিয়ে দেখা করা।
টিউশিনির নামে গিয়েছি দূর গ্রামে
হয়েছি দিশেহারা।
কদমতলার নীচে স্কুল বাড়িটার পিছে
কেটেছে কত ঘন্টা।
স্বপ্ন দেখেছি আবেগে ভেশেছি
রাঙিয়েছি এই মনটা।
ড্রিমপার্কে যাওয়া দইফুচকা খাওয়া
সিনেমা হলের হুল্লোর,
তুমি ছিলে তাই খুশি খুঁজে পাই
হয়েছি তোমাতে বিভোর।
ভালবাসা দেখিয়েছ ভাবতে শিখিয়েছ
বুঝিয়েছ প্রেমের মানে।
আমার এ জীবনে অনন্য সুখ এনে
এসেছ হৃদয়ের মাঝখানে।
বুঝেছি চোখের ভাষা বেড়েছে প্রেমের নেশা
বেঁধেছ মায়ার বন্ধনে।
যত দিন যায় প্রেম আরও চায়
খুঁজি তোমায় প্রতিক্ষণে।
অনেকটা সময় কাটল সর্বত্র কথা উঠল,
"পরিচিত প্রেম-যুগল!
সত্যি! ওদের প্রেম, অতি সার্থক প্রেম।
ওদের প্রেমটা বিরল।"
ডাইরিটা পড়তে পড়তে মেতে উঠলাম খুশিতে,
অতর্কিতে চোখে জলও এল!
আর পাতা নেই গল্পটা শেষ এথানেই।
মনটা যন্ত্রণায় ভরে গেল!
ভ্যালেনটাইন সপ্তাহ, একরাশ বিরহ,
কত গল্প মনে করিয়ে দিল।
কিছু মান অভিমানে নিশ্চিন্ত নির্জনে
আমারও একটা প্রেম ছিল!