একটু দাঁড়ানোর সময় নেই আমার।
কিছুক্ষন বসে থাকবারও সময় নেই আমার।
দিন শেষে বিছানায়-
গা এলানোর সময়টুকুও নেই আমার।
মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয়।
ইচ্ছা হয় বাসার ছাদে জোৎস্না দেখি রাতে।
আবার কখনো বা ইচ্ছে হয় -
নির্জনে গুনগুন স্বরে গান গাইতে।
একটু যদি সময় পেতাম;
চলে যেতাম দূরে কোথাও,অনেক দূরে।
যেথায় আছে নীল বৃক্ষ, সবুজ নদী।
গোলাপি রঙ আকাশ যেথায়।
অচেনা এক পাখি যেথায়।
গান গেয়ে যায় অবিরত, নতুন স্বরে।
যেথায় আছে নীল বৃক্ষ,সবুজ নদী।
দূর! তাই কি হয়?
সময় কোথায়?
একটুও যে দাঁড়ানোর সময় নেই আমার।
এই দেখ।
এক দন্ড বসে-
স্বপ্ন দেখারও সময় নেই আমার।
হ্যাঁ। সময় ছিল।
এক সময় অফুরন্ত সময় ছিল আমার।
আমার ঘরের দেয়াল ঘড়িটা-
শ্লথ হতে হতে থেমে গিয়েছিল সেবার।
তোমার বাসার সামনে দঁড়িয়ে থাকতাম বলে;
ভদ্র মহোদয়গন কী মারটাই না মারল।
সেদিন আমার হাতে-
তোমার প্রতি নিবেদন করার মত কিছুই ছিলনা।
পয়সার অভাবে কিনিনি কোনো গোলাপ।
সাহসের অভাবে লিখিনি কোনো চিরকুট।
সেদিন আমার হাতে ছিল শুধু অফুরন্ত সময়।
সেদিন সময় ছিল বলেই;
রাত জেগে তোমার জন্য ক্যালকুলাসের নোট লিখেছিলাম।
সেদিন সময় ছিল বলেই;
বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়েও ছুটে আসতাম ক্যাম্পাসে-
তোমায় দেখব বলে।
আমার সাথে কথা বলার মত,
দু'দন্ড সময় ছিল না তোমার।
কিন্তু আমার সময় ছিল।
অফুরন্ত সময় ছিল।
সময় ছিল আমারই লেখা নোট হাতে নিয়ে
আমারই প্রিয় বন্ধুকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্য দেখার।
আমার সময় ছিল।
অফুরন্ত সময় ছিল।
তারপর থেকে মহাকালের ঘড়ির কাঁটা
হাজার গুন বেগে চলতে থাকে।
আর আমার রাজকোষ থেকে
হারিয়ে যায় সবকটি সময়।
এখন আমার সময় নেই।
একটু দাঁড়ানোর সময় নেই আমার।
কিছুক্ষন বসে থাকবারও সময় নেই আমার।
দিন শেষে বিছানায় -
গা এলানোর সময়টুকুও নেই আমার।
তোমার কাছে এই নিবেদন সময় হলো বলার।
আছে কিছু তোমার কাছে আমার কিছু চাওয়ার।
ফেরত দিও এই বসন্তে, ফেরত দিও এবার।
আমার যত সময় হলো তোমার তরে উজাড়।