দীর্ঘকাল পেরিয়ে গেছে।
একটি আঁধার রাতে হয়তো
আমার আবির্ভাব।
হয়তো কোনো পুস্প ফোটা বসন্তের বিকেলে।
কিংবা,
হয়তো কোনো কাকডাকা ভোরে।
জানি না।
দীর্ঘকাল পেরিয়ে গেছে।
হে বৃক্ষ -
তোমায় জড়িয়ে -
আমার কত সুখ;
কত দুঃখ, হাহাকার, বিলাপ,
উল্লাস আর নৃত্য।
তোমায় জড়িয়ে -
আমার কত শিশির ঝরা রজনী কেটেছে।
তুমি জান?
হে বৃক্ষ -
তোমায় জড়িয়েই-
কতকাল কত বৃষ্টিতে আমি নেয়েছি।
তুমি জান?
তখনও দুর্যোগ আসে নি।
বক্র নদীটির স্রোত-
তখনও শান্ত ছিল।
পুস্প লতায় থোকায় থোকায় -
ফুল ফুটতো তখন।
একদিন সেই স্নিগ্ধ পৃথিবীতেই-
আমার আবির্ভাব।
সকালের সূর্যালোক,
আমার গায়ে প্রতিদিন আছড়ে পড়তো।
আমার সবুজ শরীর-
তখন ঝিকমিক করে উঠতো।
দুপুরের তীব্র রোদ,
আমায় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতো।
যন্ত্রনায় চিৎকার করেও থেমে যেতাম।
তবু; এক মুহূর্তের জন্যেও -
সালোসংশ্লেষণ ক্রিয়া থামাই নি।
তোমার অন্যের আশ্রয় তো আমিই ছিলাম।
হে বৃক্ষ!
দীর্ঘকাল পেরিয়ে গেছে।
বইছে যে আজ দমকা হাওয়া।
নদীর ঘাটে নেইতো খেঁয়া।
ঢেউ গুলো যে আছড়ে পড়ে-
কানায় তীব্র বেগে।
ঈশাণ কোণটি ঢেকে গেছে,
আঁধার কালো মেঘে।
হে বৃক্ষ,
ঝরা পাতার হাহাকার কি -
তোমার গায়ে লাগে?
আজ আমি বৃদ্ধ পাতা।
বয়সের ভারে, আজ আমি বিবর্ণ।
আমি দুর্বল,
আমি অক্ষম,
আমি পারি না খাদ্য জোটাতে;
আজতো আমি পারব না যে -
আঁকড়ে তোমায় জড়াতে।
একটি দমকা হাওয়া,
আজ তোমার থেকে আমায়
আলাদা করে দিল।
হে বৃক্ষ -
বিদায়।