কেমনে ভুলি জীবন থেকে
হারিয়ে যাওয়া দিন।
জীবন খাতার সকল পাতায়
লিখা তাদের ঋণ।।
বৈশাখ মাসের ভর দুপুরে
আম কুড়াবার ছল।
খেলায় খেলায় সময় যেত
পাড়ার ছেলের দল।।
কাল বৈশাখীর ঝড়ো হাওয়া
উল্কা গতি তার।
ভেঙ্গে চুরে সর্বনাশা
মানবে কোথায় হার।।
জৈষ্ট মাসের তপ্ত রোদে
সূর্য প্রখর তাপ।
ভর দুপুরে মাঠের পানে
কাহার অভিশাপ।।
আষাঢ় মাসে বর্ষা বাদল
খালে বিলে জল।
ডাউক ডাকা নিশির কালে
নামে তখন ঢল।।
রোদ্রে পোড়া দগ্ধ ধরা
তৃপ্ত জলের পান।
সুজল শ্যামল বনবনানি
হৃদয় খোলা গান।।
শাউন মাসে শ্রাবন ধারা
দিনের পরে দিন।
ঘরের চালে রিম ঝিমা ঝিম
বাজে মাদল বীণ।।
ভাদ্র মাসে কুয়াশ ভরা
ঘাসের ডগায় জল।
বিহান বেলায় কাঁচা রোদে
করতো টলোমল।।
আশ্বিন মাসে ধবল মেঘে
বর্ষা আসে শেষ।
নদীর ধারে কাশের বনে
ফুল সাজানো বেশ।।
কার্তিক আসে উদাসিন আর
বিষণ্ণতায় মন।
ধূসর ঘনো কুয়াশ ঢাকা
বাঁশ বাগান আর বন।।
অগ্রহয়ান নবান্ন ভাই
সব মানুষের ঘর।
নতুন ধানে গোলায় বাড়ী
সাজে থরে থর।।
পৌষের নামে তরুলতা
চোখে তাদের জল।
পাতায় পাতায় বর্ণ গেছে
কবর ধরার তল।।
মাঘের দিনে হাড্ডী কাঁপে
শীতের বড় জোর।
মধ্যরাতে শিয়াল হাঁকে
কখন হবে ভোর।।
পিঠা পুলি গাঁয়ের ঘরে
পড়ে যেত ধুম।
সব জেগেছে বাচ্চা বুড়া
কোথায় গেছে ঘুম।।
ফাগুন আসে অরুণ রাগে
শিমুল পলাশ ফুল।
পবন চলে দুরের দেশ
নাচে বিহগ কুল।।
চৈত্র আসে বধূর সাজে
ফুলে ফুলে সাজ।
গোলাপ জবা জুঁই কাবেরি
মাথায় যেন তাজ।।
কেমনে শুধায় ঋণ যে তাদের
ওজন অনেক ভার।
হর হামেশা হৃদয় স্মরণ
তাদের পুরস্কার।।