ভালোবাসা কী?
এ প্রশ্নের একটা বহুমাত্রিক উত্তর
অবশ্যই আশা করা যায়, তাই না?
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন; ভালোবাসা
ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়, এর আকার
আকৃতি, রূপ, বৈশিষ্ট্য স্হান, কাল
পাত্রভেদে আলাদা হয়।
দীর্ঘ বারো বছরের ভালোবাসার
মানুষটি যখন সড়ক দুর্ঘটনায়
পঙ্গুত্ব বরণ করে, কিংবা একটি
হাত বা পা হারায়- নিতান্ত দুর্ভাগা
হলে সে তাঁর ভালোবাসা খোয়ায়।
এমন দৃষ্টান্ত যেমন ভুরিভুরি তেমনি
কত মানুষ আছে যারা জেনেশুনে
ল্যাংড়া- খোড়াকে ভালোবাসায়
ভরিয়ে দেয়।
তোমাদের মধ্যে এমন অনেককে
পাবে যারা ভালোবাসা মানে বোঝে
ইটের বাড়ি, সোনাদানা, জহরত
আর কাড়িকাড়ি টাকা। এদের কাছে
নোঁনাধরা টিনের ঘরে বাস করা
জরিনার ভালোবাসা বিন্দুমাত্র
ভালোবাসা নয়! এরা ভালোবাসে
শহরের শবনম কিংবা রিয়াকে
যাদের চোখে ভালোবাসা হলো
অভিজাত কোনো হোটেলের
বলরুমে ব্যালে ডান্সের ছন্দে
হারিয়ে যাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের
ফুডকোর্টে ক্যান্ডললাইট ডিনার
করা আর মন চাইলেই প্রিয়জনের
সাথে লংড্রাইভে হারিয়ে যাওয়া।
আবার এমন অনেক চরিত্র আছে
যারা চকচকে বাড়ি নয়, মোহময়ী
নারী নয়, সুদর্শন পুরুষ নয়, তারকা
বা খ্যাতি নয়; ডুব দেয় বাস্তবতায়,
বাস করে খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘরে,
আর সংসার পাতে অকৃত্রিম রূপের,
পরিমিত আকাঙ্ক্ষাবোধের জয়নব
কিংবা জয়নালের সাথে যাদের কাছে
জীবন মানে বাঁচার লড়াই, জীবন মানে
ত্যাগের লড়াই, অন্যকে সুযোগ দেওয়াই।
ভালোবাসা কী? তার উত্তর বহুমাত্রিক,
তা আগেই বলেছি। তা না হলে কেউ কেন
তাঁর সাম্রাজ্য বেঁচে বখাটে পোষে? আবার
কেনইবা কেউ অন্নদাতা দেবতাতুল্য মানুষটি
কে ঘৃণার রাজ্যে ছুড়ে ফেলে? কেনইবা কেউ
অঙ্গদাতার সঙ্গদানে বচসা করে? কেনইবা
কেউ মিরিয়ামের নিষ্কাম ভালোবাসা ফেলে
দিয়ে সাহসী নারী ক্লারার শরীরে বাসা বাঁধে?