দিনের হিসেবে তেইশ শত ষাট
দিন শেফা আমার ছিল, মানে
আমার হৃদয়ের ভালোবাসা ছিল।
কী উচ্ছ্বাস ছিল আমার সে প্রেমে!
বাংলালিংকের সিমটা পোস্ট পেইড
করে সন্ধ্যা রাত থেকে শুরু করে তার
সাথে ভোররাত পর্যন্ত প্রত্যহ আলাপ
জমাতাম। আলাপের ফাঁকে ফাঁকে
জানালার ফাঁক গলে আমার চোখ
দুটো চষে বেড়াতো মহাকাশের অন্তে।
কোটি কোটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের ভিড়ে
আমি তার মায়াবী মুখখানি খুঁজতাম।
সুদূর আকাশের ঐ তারাগুলোর ন্যায়
শেফা আমার জন্য বাস্তব কিনা সেই
প্রশ্ন ইনিয়ে বিনিয়ে নিজেকে করতাম।
এক রাতে ঐ তারাগুলোর দিকে তাকিয়ে
শেফাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ' কতটুকু স্হায়ী
তুমি আমার জীবনে?' শেফা জবাবে বলে
ছিল, 'আকাশের নীল জমিনে তারাগুলোর
অস্তিত্ব যেমন'। ভালোবাসার সেই শুরু।
তার পরের দিনগুলোতে কত সাক্ষাৎ
হয়েছে, কত সহস্র কোটি অব্যক্ত ভাব
ব্যক্ত হয়েছে, কত সহস্র বার খুনসুটি
হয়েছে, কত শত বার হাত ধরাধরি করে
পার্কে কিংবা রাজপথে হাঁটা হয়েছে,
কত বার ঘর বাঁধার প্রস্তাবনা এসেছে!
তার সঠিক পরিসংখ্যান আমার জানা
নেই; আমার শুধু জানা ছিল শেফাই
আমার শুরু আর সেই আমার শেষ।
সেই আমার আকাশ ভরা উজ্জ্বল তারা।
হঠাৎ ঝড়ের বেগে এসে এক সন্ধ্যায়
রমনা পার্কের কংক্রিটের বেঞ্চে বসে
আমার মুখোমুখি হয়ে শেফা কাঁপা
কাঁপা স্বরে বললো, ' আমাকে মাফ
করে দাও, ইমু। বাবার পছন্দ করা
ছেলেকেই আমি বিয়ে করবো। আমি
তোমার কাছে অত্যন্ত অনুতপ্ত।' তার
সেই সন্ধ্যার প্রতিটি কথা আমাকে
দূর্বার গতিতে ছুটে আসা তীরের মত
বিদ্ধ করেছিল হৃদয়ের গহীন কোণে।
আজোও আমার সেই ভালোবাসার নীল
আকাশ আছে, শুধু খসে পড়েছে তার
জমিন থেকে শুভ্র কোমল স্বপ্নীল তারা।
ভালোবাসা এমন কেন, শেফা? সর্বহারা?