কোলরিজ সাহেব বললেন,
সবখানে পানি আর পানি
কিন্তু একফোঁটা পানযোগ্য পানি
কোথাও নাই!
গোটা সভ্যতার জন্যই তো
এ এক বড় হতাশার গল্প; কারণ
পানি ছাড়া তো জীবনই নাই!
আর ভদ্রলোক সে হাহাকারের
গল্পই ছড়ালেন জানি!
এবার আমাদের ঐ 'মীর মুগ্ধ' ছেলেটাকে দেখো
তপ্ত দুপুরের খাঁ খাঁ রোদের ঝাঁঝালো মিছিলে
মুক্তিকামীরা যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ছে,
অজানা আশঙ্কা আর ভয়ও যখন
তাদেরকে তাবড়ে বেড়াচ্ছে,
দয়ার দরিয়া শুকিয়ে গোটা রাজপথ যখন
নিপীড়িতের চোখে মরুময় হয়ে উঠছে,
এই মুগ্ধ তখন সবাইকে ডেকে ডেকে বলছে-
পানি লাগবে, পানি?
যেন তৃষ্ণার্ত জনসমুদ্রে এক সমুদ্র
পানি ঢালবেন তিনি!
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো এক ডাকসাইটে প্রফেসর
তার মিডিয়া মন্তব্যে বারবার বলতেন,
আমি আশাবাদী, আমার এই ভগ্নপ্রায়
দেশ একদিন সোনা হবে।
এই সংঘাত, এই রক্তের হোলি খেলা
একদিন অবশ্যই বন্ধ হবে।
তবু মাতৃভূমির কোনো ক্রান্তিকালে
তৃষ্ণার্ত জনতা তাকে পায়নি!
অথচ ঐ আবু সাঈদকে তোমরা দেখো
রক্তখেকো বন্দুকের সামনেও কি প্রাণবন্ত!
যেন ঐ বন্দুকটাও তার চঞ্চলতায় ভড়কে গেল!
তাই নিজেকে বাঁচাতে ছুড়ে দিল অব্যর্থ গুলি!
কত সাহসের স্ফুলিঙ্গ ঐ প্রসারিত অপুষ্ট বুকে !
আর কত কত আশার বাণী ঐ সহাস্য ছোট্ট মুখে!
তাবড় তাবড় প্রফেসররাও যেন লজ্জায় মুখ লুকালো,
আবু সাঈদের মরা লাশটা যেন 'একটি বাংলাদেশ'!
আবু সাঈদের রক্তাক্ত গেঞ্জিটা যেন তার 'লাল পতাকা'!
কে জানে কোন স্বর্গে বসে বলছে আবু সাঈদ -
তোমরা সকল মুক জনতাই আমার লাশের খুনি।