স্ট্যান্ডে পৌঁছানো মাত্রই ট্রলিব্যাগটি
আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে
তুমি কাউন্টারের দিকে
ছুটতে লাগলে;
মুহূর্তের মধ্যে আমার দৃষ্টি
চারদিক পাক খেয়ে এসে
পড়লো আবার যথাস্থানে,
না, তুমি নেই, এখনো এসে
পৌঁছাওনি কাউন্টার থেকে,
কিছুটা অস্বস্তি ছিল,কেউ
দেখে ফেলবে এ ভয়ে,তাই
চাইছিলাম তুমি দ্রুত ফিরে
আসো হাতে বাড়ি যাওয়ার
টিকেট নিয়ে।
তবে বেশিক্ষণ সে ভয়কে তুমি
স্থায়ী হতে দিলে না হুড়মুড় করে
বাসে উঠে যেয়ে, ট্রলিব্যাগ তখনো
আমার একইসাথে কম্পিত ও
শিহরিত হাতে; বাসের হেল্পার
ভাই সেই শিহরণে ছেদ টানলেন,
আমি নিরূপায় হয়ে ভাবলাম,
ব্যাগটি গন্তব্যে পৌঁছবে তো?
ততক্ষণে তোমার সেই কোমল
কিন্তু জোয়ার সৃষ্টিকারী চেহারা
জানালার শক্ত কাঁচ বেয়ে ধনুকের
মতো বাঁকা হয়ে আমার বায়বীয়
অস্তিত্বের দিকে ছুটে আসতে চাইছে।
ব্যাগের দিকে তার খেয়াল কোথায়!
সে শুধু আমার দিকেই ফ্যালফ্যাল
করে চেয়ে আছে, স্থির এবং অব্যর্থ
দৃষ্টিতে; হ্যাঁ, আমি তার সেই পুনঃপুনঃ
দৃষ্টির আড়ালে একটি প্রেমতাড়িত
রমণীর ছায়া দেখেছিলাম। একবার,
দু'বার নয়, যতবার দেখা যায় ততবার
সে সেদিন দেখেছিল আমাকে। আমিও
তাই করেছিলাম শিহরণের ধোঁয়ায়
কুণ্ডলী পাকিয়ে।
সত্যি বলছি, এতো আবেগ দিয়ে,এতো
প্রেম দিয়ে, এতো ভক্তি দিয়ে কোনো
নারী কখনো চাইনি আমার কাঠের
মতো শক্ত ও গণ্ডারের চামড়ার মতো
পুরু চেহারার পানে। সেদিনের ব্যাগ
হাতে দাঁড়িয়ে থাকার অনুভূতিটি যদি
শিহরণের হ্রদ হয়, তবে তোমার পাশে
বসে খুনসুটি করার অনুভূতিটি ছিল
শিহরণের নদী, আর তোমার ঐ মুক্তার
মতো ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকা প্রেমপূর্ণ
মুখের পানে চেয়ে থাকার অনুভূতিটি ছিল
শিহরণের অথৈ সাগর।