ঐ দূরের নীল প্রশস্ত আকাশ
যাকে আমি এতো দিন আপনার বয়ানে
আমাদের সবার বাড়ির বড় হৃদয়ের গেট
মনে করে এসেছি; যার নীচ দিয়ে প্রবেশ বা
বাহির হলেই দিলটা ভীষণভাবে বড় হয়ে যাবে,
চিন্তা আর বুদ্ধির পরিসর মাটি কামড়ে রইবে না,
গোটা জগতটাকেই আমাদের এই ছোট্ট হৃদয়ে
হাতুড়ির ঠক ঠক আঘাতে বসিয়ে দেওয়া যাবে!

ঐ আকাশটাকে আজ আমি চিনলাম একটা আস্ত
বিলবোর্ড হিসেবে; যার কাজ হরেক রঙের আলোয়
আলোকিত অক্ষরগুলো দিয়ে বিভ্রান্ত ক্রেতাকে আরো
একবার বিভ্রান্ত করা যাতে সে বিনা প্রশ্নবাণে টাকা উড়ায়
সৌন্দর্য কিনতে; প্রাকৃতিক সুখের উপাদানগলো পায়ে
ঠেলে কৃত্রিম সুখের নহর আনতে।

তাই এমন ছদ্মবেশী আকাশ আমার চাই না, যে
মোরে বিশ্বাসের বিপরীত প্রতিদান দিবে প্রতিক্ষণে;
দশ হাতে সর্বক্ষণ নক্ষত্রের উজ্জ্বল আলোর লোভ
দেখিয়ে প্রয়োজনে কুপির আলোয় ভুলিয়ে দেবে।

এমন বর্ণচোরা আকাশ আমার চাই না, যে
মোরে ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, সাইমুমে বুক চিতিয়ে
দাঁড়িয়ে থাকার প্রলোভনে ফেলে সময় হলেই
বন্দুকের মতো মৃত্যুভয়ে নুইয়ে দেবে!

এমন ছলনাময়ী আকাশ আমার চাই না, যে
মোর সম্মুখে গাঢ় নীল চাদরের বিছানা পেতে
শুভ্র মেঘের ভেলায় তুলে সময় হলেই অট্টহেসে
যুদ্ধের রং লালে লালে মাখিয়ে দেবে!

মাথার উপরের ঐ প্রতারক আকাশটাকে তাই
আজ শামিয়ানার মতো গুটিয়ে আনব; ছোট
ছোট ভাঁজ দিয়ে বেঁধে ফেলব সুতুলি দিয়ে ।
অন্যথায় আলো ঝলমলে ঐ বহুরূপী আকাশটা
মাথার উপরে হঠাৎ তারকাসমেত ভেঙে পড়বে;
কারণ মিথ্যার বেসাতি তো বেশি দিন টেকে না।