তোমার টলমলে চোখে না চেয়ে সেদিন-
কি সাবলীল বলে দিলাম, জমানো অভিযোগ।
আমাদের ব্যবধান ব্যবচ্ছেদ হলো সেদিন।
তুমি কাঁদলে না আর; তোমার চোখের নদী শুকিয়ে
তপ্ত পাঞ্জাবের ধুলো উড়া মরু উদ্যান হয়ে গেলো।

আমি অভিযোগ এনেছি-
সেই আমি, যে কিনা শতবার বিনা বাক্যে জানিয়েছি
পৃথিবীর 'পরে আর একবার যদি মহাপাপ হয়,
যদি থেমে যায় আহ্নিক গতি, ফুল-ফল ফোটা;
সবের মূলে যদি থাকো তুমি, তবুও
আমি জানবো ধরিত্রীর মতো-
দৃশ্য-অদৃশ্য সমগ্র তল্লাটে চির নিষ্পাপ তুমি।
আমার সেই অগাধ বিশ্বাস আর বিস্ময়ের পাহাড় ভেঙে-
সেই আমি অভিযোগ এনেছি!
ভালোবাসার বুলি শোনার দায়ে মৃত্যুদন্ড দিয়েছি তোমায়।
রৌদ্রজ্বল আকাশ হটাৎ বজ্র আঘাতে-
আমি জানি না, কেন পুড়িয়ে দিলো সব।
কিন্তু তুমি তো জানতে,
পৃথিবীর সমস্ত পবিত্রতা ঘিরে ধরতো আমায়-
পাহাড় চূড়ার সোনালি বুদ্ধার মতো,
কৈলাশের শুভ্র বরফের মতো হৃদয়ে যার অবস্থান।
সেই দেবীর চরণে, পূজার ফুল হয়ে কবিতা ঝড়ে পড়তো।
ভালোবাসার বুলি হয়ে আমি তো-
মধ্যযুগীয় কীর্তন কিংবা রাজকীয় শ্লোকের মধুর বাক্যে
শোনাতে চাইতাম সভ্যতার শীর্ষ কবিতাখানা।
তবুও আমি অভিযোগ এনেছি!
কবিতার বিপরীতে কবিতা হয়ে উঠতে না পারার অভিযোগ।

প্রিয়তমা, আমি চাই,
তুমি আরও অভিযোগ অনলে দহিত হও,
মানুষের আদালতের সমস্ত দেয়াল ভেঙে যাক তোমার অপরাধে।
সমস্ত সভ্যতা একসাথে অভিযোগ আনুক,
কবিতার দ্রোহে তুমি নরকে যাও।
সমুদ্রের ফেনার মতো ভেসে যাক তোমার বোধ,
তুমি উন্মাদ হয়ে উঠো, বন্য হয়ে উঠো কবিতার জন্য।
তবুও, তুমি ফিরে আসো-
কবিতার বিপরীতে কবিতা হয়ে; কবিতা শুনবে বলে।


মঙ্গলবার
০৮ কার্তিক ১৪৩০
নারায়ণগঞ্জ