আমাকে দেখো উদারগ্রস্ত কাতরানো সৈনিক হিসাবে-
পরে আছি শহরের কোন এক
পাবলিক লাইব্রেরিতে।
আমাকে দেখো চর্চিত সভ্যতার অবান্তর জনগোষ্ঠী হিসাবে-
পরে আছি একান্তই কোন এক
ছুটন্ত ফ্লাইওভারের নিচে।
আমাকে দেখো অচেনা আকরিকের ফসিল হিসাবে-
পরে আছি মহাসমুদ্র পাড়ে
কোন এক, কোন এক কুষ্ঠ পাথরের নিচে।

আমাকে তুমি যেভাবেই দেখো-
যে সময়ই দেখো, চিনবে কেবল তোমারই রূপে।
তোমার সময়ে! আমাকে তুমি আরো কিছুক্ষণ দেখো-
দেখো উপন্যাস বিন্যাসে ক্লান্ত লেখকের চোখে,
দেখো ফ্লোরে মাদুর পাতা অসহায় রোগীর চোখে,
দেখো মাসিক পারিশ্রমিক হাতে পাওয়া ঋণগ্রস্তের চোখে,
দেখো, আরও কিচ্ছুক্ষণ দেখো-
কিভাবে আমি সময়ের চাদর মুড়ে ফিরে গেছি-
আমার কোলাহল ফেলে নিথর লাশ কাটা ঘরে,
বিপর্যয় কেটে যাবে বলে কিভাবে ঝিমুচ্ছি অপেক্ষার হাল ধরে।
আরও দেখো- আমাকে কিভাবে দেখে
সাদা ইউনিফর্ম পরিহিতা সুপর্ণা কলেজ ছাত্রী,
বাসের হেল্পার, পকেটমার, সচিবালয়ের ঠুনকো পিয়ন।
আমাকে তুমি আরো কিচ্ছুক্ষণ দেখো-
দেখো আরও কিছু মুদি-মুটে-ফেরিওয়ালার চোখে।
দেখো আরও দেখো শত নিয়মে-
শত মানুষের চোখে, যে ধারায় আমাকে খুঁজে নিতে পারো।

আমাকে দেখার এই পর্বে
তুমি অনেক কিছু দেখে নিবে, শিখে যাবে।
শিখে যাবে কিভাবে মানুষের চোখে দেখে নিতে হয়-
বুঝে নিতে হয় একই শতাব্দীর গণমানুষের মেরু পার্থক্য।

এতো লগ্ন পেরিয়ে,
এতো কিছু দেখা-দেখি, শেখা-শেখির পর
যদি প্রশ্ন করি- কতখানি দেখলে আমায়?
বলতে পারবে তো?

মঙ্গলবার,
১৬ কার্তিক ১৪২৯ / ০১ লা নভেম্বর ২০২২
আগারগাঁও।