মানুষ দেহের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে, চোখের জল ফেলে, কিন্তু আত্মার মৃত্যু নিয়ে তাদের কোনো অনুভূতিই নেই। গাযায় প্রতিটি মুহূর্তে নতুন জীবনের জন্ম হচ্ছে, যদিও দেহগুলো একের পর এক রক্তে ভেজা সাদা কাপড়ে মোড়ে মাটিতে মিশে যাচ্ছে। সেখানে দেহের মৃত্যুর তালিকা কতইনা দীর্ঘ, কিন্তু একটি আত্মারও মৃত্যু কেউ কখনো দেখেনি। গাযার মাটি যেন প্রতিটি প্রাণকে অক্ষত রাখে, তাদের আত্মাকে করে অমর।
আর পৃথিবীর অন্যন্য প্রান্তগুলোতে তাকান। সেখানে সারি সারি মৃত আত্মা। দেহগুলো বাহ্যিক চাকচিক্যে সাজানো, মুখে জীবনের ছায়া যেন জীবিত মানুষ—কিন্তু ভেতরে শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে মৃত। তারা বেঁচে আছে কেবল বাহিরের খোলসে, মুখোশের আড়ালে লুকানো এক শূন্যতা, প্রাণহীন চোখে লেপ্টে থাকে এক গভীর নীল নিঃসঙ্গতা।
একটি মৃত্যু তখনই মহিমান্বিত হয়, যখন আপাত প্রয়াত দেহের সঙ্গে জীবিত আত্মার মিলন ঘটে। আর অভিশপ্ত মৃত্যুতে আত্মা আগে থেকেই মরে যায়, রেখে যায় নিছক নিঃশ্বাস নেওয়া এক শূন্য খোলস—হাজার বছরের দূরত্ব নিয়ে দেহ ও আত্মার আর মিলন হয়না।
গাযার মানুষরা কখনো মরে না; তাদের দেহ ধুলোর সাথে মিশে যায় বৈকি, তাদের আত্মা থেকে যায় অটুট, অপার শক্তিতে পরিপূর্ণ। আর গাযার বাইরে? মৃত আত্মা নিয়ে জীবিতের ভান করে বেঁচে থাকে মানুষগুলো। তারা হাড়-মাংস-চামড়ার খোলসে প্রতিদিন একটু একটু করে মরে, তাদের নিঃশ্বাসের ভেতরে প্রাণের কোনো অস্তিত্ব নেই।