কবিতাঃ "মোস্তফা ভাই কবি"
কবিঃ বর্ণ
তারিখঃ ২৮/০৫/২০২১ইং
সময়ঃ ২৪ঃ২০ ঘটিকা
মোস্তফা ভাই , এখন নাকি , মস্ত বড় কবি,
চারটি ভাষায়, কাব্য তিনি, লিখেন অনর্গল,-
বাংলা এবং ইংরেজি, আর হিন্দি ও আরবি
লেখার ঠেলায় খসে পড়ে, তার কলমের বল।
ছড়িয়ে ছড়ার, শতেক খাতা, গল্প সহ আরও,
পাণ্ডুলিপি ঠাসা - ঠাসা , হাজার উপন্যাসে-
একেএকে নাট খুলে যায়,ছাপার মেশিনটারো,
সম্পাদকে হাত-পা ধরে, কেদে বাঁচার আশে।
গভীর রাতে ভুতের গল্প, সন্ধ্যা রাতে প্রেমের,
এমনি করে, মোস্তফা ভাই, করেন বন্দোবস্ত-
একেক বিষয়, লেখার তরে, ভিন্নতর ফ্রেমের,
বাদ দিয়ে সব, সকল রকম, অসংগতি গ্রস্ত।
মোস্তফা ভাই, অনেক নামি, অনেক বড় কবি,
তাইনা ভেবে, ধরা কে সে, সরা'টি জ্ঞান করে-
রোজই আসে, পত্রিকাদির, পাতায় তারি ছবি,
যেইখানে যায়, ভক্তরা সব হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
একদিন তার, ঘরের কাজে, কবি মশাই নিজে,
অটোয় করে, কাজটি শেষে, ঘরে ফেরার পথে-
সকাল হতেই, টিপটিপানির, অল্প জলে ভিজে,
কবি মশাই চা'র দোকানের,নামেন বারান্দাতে।
বারান্দাতে, তিনটে টেবিল, ছয়টি মোটে বেঞ্চি,
ভেতরে'ত যায়না গোনা, বেঞ্চি লোকের ভিড়ে-
বাহিরেতে বসার জায়গা, নাই মোটে এক ইঞ্চি,
কবি হেথা ঠায় দাঁড়িয়ে,তাকায়না কেউ ফিরে।
এত বড়ই দুখের কথা, এই দেশের এক রতন,
কয়েক জোড়া অশিক্ষিত, মুর্খ লোকের মাঝে-
চা'র দোকানে দাঁড়িয়ে আছে, রবাহূতের মতন,
এক খ্যাতিমান কবির সাথে,এমনটা কি সাজে!
মোস্তফা ভাই, ক্ষিপ্ত মনের, লুপ্ত স্বভাব গুলো,
আবার যেন, তুলে দিলেন, আপন গলার সুরে-
ওরে ব্যাটা, চাল ছাড়া ঘর, গাধা, গয়াল, হুলো,
আমায় তোরা চিনিসনা কেউ,সারাটা গাঁ জুড়ে।
আমি হলাম তোদের দেশে,প্রখ্যাত এক বরেণ্য,
বিশ্ব জোড়া, সকল দেশে, আমার হাতের যশ-
আমার কথা শুনতে মাঠে,বসে লোকের অরণ্য,
একটু খাতির কর, রে বাবা, একটু সরে বস্,।
কবির কথা, শুনে সবাই, চোয়াল খুলে হাসে,
আঠারোর এক ছোকরা বলে,ভীষণ হাসি পেল-
আরেক বুড়ো বলতে গিয়ে,খক খকিয়ে কাশে,
আগের পাগল,ভাত পায়না,নতুন পাগল এলো।
তাদের মাঝে একটি লোকে বেচে দাদের মলম,
সেই খানে তার কাণ্ড দেখে, কবির হৃদয় ফাটে-
খাতা হাতে , বলেন এসে , লিখুন দু'চার কলম,
আজ থেকে বেশ,ছন্দে সুরে, বেচব মলম হাটে।
কবি মশাই, সটকে পড়ে,মান বাঁচালেন সেদিন,
সাথে এ ও বুঝে গেলেন, মান, যশ, সব জলে-
তিনি যাদের মনে করেন বেএলেম আর বেদ্বীন,
তারাই সকল যশের আধার, বাকিরা সব তলে।
------*******------