কবিতাঃ "হোসনেয়ারা"
   কবিঃ  বর্ণ

তারিখঃ ৩১/০৫/২০২১ইং
  সময়ঃ  ১০:৩০ ঘটিকা


হোসনেয়ারা  তখন বোধহয় গগন ঘন কালো,
হঠাৎ করে দিনের বেলা কেড়ে সকল আলো।

ঘুর্ণিঝড়ের  মতোন করে করলো সকল গ্রাস,
সময়  বুঝি  ছিলো  তখন   মধ্য শাওন মাস।

আমার দ্বারায় হয়নি হোসনে রক্ষা তোমার ঐ,
প্রথম দেখায়  আমার  জন্যে কেনা প্রথম বই।

তোমার প্রিয় ফুলদানিটা সে ও গেছে ভেসে,
কখন  যেন কেমন করে  তীব্র  জলোচ্ছ্বাসে।

মনে বড়ই লাগছে ভীষণ তোমার জন্য মায়া,
তোমার  প্রিয় বট গাছটি  আর দিবেনা ছায়া।

ঘরের বাহির  হয়ে দেখি থামলো যখন ঝড়ে,
বুড়ো বটের মূলটা  আছে  উপুড়  হয়ে পড়ে।

হোসনেয়ারার সব্জিক্ষেতের করুন দশা বেশ,
কেমন করে মুখ দেখাব সেই ভেবে হই শেষ।

মোদের ঘরের চালের পরে শত কাকড়া বিছে,
সারাটি  গাঁ  তলিয়ে আছে গলা পানির নিচে।

করিম চাচার ঘর ভেঙেছে ময়না দিদির হাঁড়ি,
ভাগ্য ভালো কদিন আগে গেলে বাপের বাড়ি।

ঝড়ের  রাতে একলা আমি  ছুটি দিক্ বিদিক,
এই ভেবে ফের সান্ত্বনা পাই তুমি আছো ঠিক।

কিন্তু হা রে ঝড়ের পরের সকাল বেলায় যখন,
মাছের মত সাঁতরে এল তোমার গাঁয়ের মাখন।

হায় দুলাভাই বললো মাখন কণ্ঠ কাঁপা কাঁপা,
বানের জলে ভেসে গেছে হোসনেয়ারা আপা।

কি কস কিরে ফালতু কথা,মদ খেয়েছিস নাকি
দুই হাতে তার দু'হাত ধরে,জোরসে মারি ঝাঁকি।

কিন্তু একি মাখন মিয়ার চোখের কোনার জলে!
স্বাক্ষ্য  যে  দেয়  মাখন মিয়া সত্য কথা  বলে।

তবে কিগো শিকার হলে অকাল  মরণ খাঁচার,
কথা দিয়ে আমার সাথে  হাজার জনম বাঁচার।

মনের ভেতর বানের পানি যায় যে ভীষণ  বয়ে,
মাথার পরে পড়ে আকাশ  টুকরো শতেক হয়ে।

জলোচ্ছ্বাসে আমার প্রাণের সব নিয়েছে কেড়ে,
তোমায় নিয়ে ভাবার জন্য আমায় গেছে ছেড়ে।

হোসনেয়ারা ভালো থেকো আমিও ভালো আছি,
অনেক দূরে থেকেও আছি তোমার কাছা কাছি।

ঝড়ের রাতে এখন আমার ভয় লাগে না মোটে,
জীবন যে মোর  জর্জরিত হাজার রকম চোটে।

এখন আমার নেই হারাবার তেমন কিছুই  বাকি,
দিনে  মানে  যম এর পথে নীরব  চেয়ে  থাকি।

        ---------*****-----------