রবীন্দ্র বাংলা বিদ্যালয়
পোর্টব্লেয়ার,দক্ষিণ আন্দামান,ভারত।
ছোটদের আসর:-  ২৯,অক্টোবর,২০১৪.
(সম্পাদনা: রইসউদ্দিন গায়েন,সঙ্গীত-শিক্ষক,রবীন্দ্র বাংলা বিদ্যালয়,পোর্টব্লেয়ার,দ:আন্দামান,ভারত।)

স্বজনহারা / পূজা বিশ্বাস,নবম শ্রেণি
আমার নাম ‘তারা’
আমি স্বজনহারা--
সবাই নাকি বলে আমায়
থাকি আপনহারা!

রবি-মামার বিদায় শেষে,
সন্ধ্যারানী ডাকে এসে,
আমি তখন দূর আকাশে দেখি--
আমার মতো লক্ষ তারা,
মিটি-মিটি দেখছে কা’রা,
আমার মতো স্বজনহারা একি!

দূর আকাশে সবাই আছে,
কিন্তু আসে না তো কাছে,
বিশ্বভূবন একি লীলায় ভরা!
সবুজ-সোনা মাটির বুকে
আছে কতো সোহাগ-সুখে
আমরা কেন এমন স্বজনহারা?

স্বপ্ন ছিল / তানিয়া পারভিন ও সাবিনা খাতুন(একাদশ শ্রেণি)
যাঁদের জন্য হলাম স্বাধীন,
ভুলবো না ভাই, তাঁদের এ ঋণ,
দেশের জন্য জীবন দিলেন যাঁরা।
মা-ভাই-বোন,আর প্রিয়জন,
কোথায় গেল বন্ধু-স্বজন,
ফাঁসির মঞ্চে হারালো প্রাণ তাঁরা!

এমন উদার সোনার দেশে,
অত্যাচারী ব্রিটিশ এসে,
মারলো চাবুক, বাঁধলো শিকল পায়ে---
মায়ের কতো সুবোধ ছেলে,
মরলো শুধু খেটেই জেলে,
পায়নি মুক্তি স্বাধীনতার দায়ে।
সেল্যুলার জেল তারই প্রমাণ,
আজও দেখি জালিম্-নিশান,
সেই ফাঁসিঘর,ঘানি ঠেলার খেলা।
হায় রে পাষাণ অন্ধ-কারা,
দেখেছিস কি অশ্রুধারা,
যায় বয়ে যায় স্বাধীনতার বেলা।

ছোট্ট সেলেই বন্দী রাখা,
দিনে-রাতে একাই থাকা,
ক্ষিধের জন্য শুধু নোংরা খাবার।
রুগ্ন-রুক্ষ শরীর নিয়ে,
মনের মাঝে দীপ জালিয়ে,
স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতা পাবার!!

জলপান / স্নেহা মজুমদার,অষ্টম শ্রেণি
জলপান সবচেয়ে বেশি দরকার--
পিউরিটি বানিয়েছে তাই সরকার।
পাড়াগাঁয়ে মানুষরা যে জল খায়
জীবানুরা থাকে তাতে,পেটে ঢুকে যায়।
পানা-পুকুরের থেকে একঘটি জল
ফুঁ দিয়ে ওঝা বলে, পাবি ভাল ফল।
‘তিনদিন খেলে তবে রোগ সেরে যাবে—
তিন টাকা দাও দেখি,যা হয় তা হবে’।
কলেরায় ভুগে যেই, গেল প্রাণ-তরী---
ওঝা বলে-- ‘বলো তবে, ‘হরি বোল হরি’!!

রূপেগুণে / মিনতি মন্ডল,অষ্টম শ্রেণি
রূপে তুমি লক্ষ্মী আর জ্ঞানে সরস্বতী---
কেমন ক’রে হ’লে তুমি, এমন কোমল-মতি।।
বিদ্যাগুণে সবার প্রিয়, রূপে আরও প্রিয়
যদি পারো একটুকু রূপ,আমায় তুমি দিও।
বাণী দিও বিদ্যাগুণে, ছন্দজ্ঞান শেখাও---
কবি হতে চাই যে আমি, সরল পথ দেখাও।
সবার আশীর্বাণী পাব,সবার ভালবাসা—
এইটুকু মোর চাওয়া শুধু,এইটুকু মোর আশা!!