আমার কবিতা / সুজয় বিশ্বাস
রবীন্দ্রনাথের প্রেরণা
শ্রীরামকৃষ্ণ’র সাধনা
স্বামীজী’র চেতনায় উদ্বুদ্ধ
আমার এই মনোভূমিতে
নতুন বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল, এখানেই
এই রবীন্দ্র বাংলা বিদ্যালয়ে।
এখানেই পেয়েছি সবুজের মাঝে
সবুজ হয়ে ওঠার প্রেরণা ।।
আমার কবিতা / নন্দিতা পাল
হারিয়ে যাওয়া দিনগুলির কথা খুব মনে পড়ে ।
এই সঙ্গীতকক্ষ ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয়
প্রিয় সঙ্গীতগুরু গায়েন স্যার ।
মনে পড়ে আমার ছায়াসঙ্গী ছিল
দীপা ও রিষা।
ওদের ছাড়া আমার দিন শুরু-ই হ’তনা ।
সবুজ পাহাড়ি বনভূমি, নীল আকাশ,
পূব সাগরের হাওয়া, পাখির ডাক—
রবীন্দ্রনাথের গান—
‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা’
আজও আমায় ডাকে ।
ভাল থেকো, আমার প্রিয় রবীন্দ্র বাংলা বিদ্যালয় ।।
আমার কবিতা / উজ্জ্বল মিস্ত্রি
খেলা আর মাছধরা এ দুটোই প্রিয়
ভালো যদি মনে করো, শুভাশিস দিও।
মাছ ধরা কাজ নাকি শুধু জেলেদের
কেউ বলে খেলা নাকি বোকা ছেলেদের ।
সব শুনে, সব জেনে, তবু মাছ ধরি
তারি মাঝে গান গাই, লেখাপড়া করি ।
বাড়ি আমার সীতানগর, উত্তর আন্দামান
কালপং নদীর বুকে শুনি কত গান ।
নদীর দু’পারে কত মানুষের বাস
কেউ শুধু ডিঙি বায়, কেউ করে চাষ ।
আমিও তাদের ছেলে তাই ধরি মাছ
হাসি, খেলি,গান গাই, আরও কত কাজ ।
আশা আছে শিক্ষক, হ’ব একদিন—
মা-বাবার মুখে হাসি, ফুটবে সেদিন ।।
আমার কবিতা / কঙ্কন মন্ডল
ছবি দেখা, ছবি আঁকা শখ জীবনের
সাগর-পাহাড়-নদী সবুজ বনের ।
অবুঝ মনটা তবু ফিরে ফিরে চায়
গণকযন্ত্রে চোখ বারে বারে যায় ।
দুটি চোখ চায় ওই, দূর নীলাকাশ
এ হৃদয় চায় এক, শান্তি নিবাস ।
চাওয়া পাওয়া নিয়ে চলে, জীবনের খেলা
জানিনা কখন হায়, বয়ে যায় বেলা !
এবার ধরব তুলি দ্য ভিঞ্চি’র মতো
আঁকব এক মোনালিসা স্বপ্নের মতো ।
ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ, যেই দিল ডাক
ডিজিটাল প্রেম ছাড়া, সব হ’ল ফাঁক !!
আমার কবিতা / স্বপ্না মন্ডল
খেলাধুলা প্রিয় মোর, আজ ব’লে যাই
কখনও বা গান গাই, তবলা বাজাই ।।
পুজোর বাজনা মোর, সবচেয়ে প্রিয় ।
ভাল যদি লাগে তবে, হাততালি দিও।।
আমার তালের সাথে, শর্মিলা ম্যাডাম
আরতির ছন্দে, নেচে নেচে যান ।
এ কথা তো ঠিক, আমি হ’ব শিক্ষক
শিক্ষা তো নয় যেন, শুধু বক্ বক্’ ।
স্বাস্থ্য সবার মূল সকলেই জানে –
জানে না গুরুজী সব, খেলার কী মানে ।
জীবনের খেলা মানে, আরও বড় কাজ
এতেই গড়বে দেশ, এতেই সমাজ ।।
আমার কবিতা / পিয়ালি বিশ্বাস
সাত-সমুদ্র তেরো নদী জানিনা কোথায়
তবু যেন মন সেথা ছুটে যেতে চায় ।
নতুন নতুন দেশে যেথা খুশি যাব
কোপ্তা কাবাব আর বিরিয়ানি খাব ।
ফুচকা আমার প্রিয়, তুলনা তো নাই
যে দেশে ফুচকা নাই , সব তো বৃথা-ই ।
শিক্ষিকা হয়ে ভাবি কী যে করি ছাই—
রবীন্দ্র বিদ্যালয়ে ক্যান্টিনও নাই ।
আমি সব খেতে চাই, শুনি ‘নাই নাই’
‘নাই নাই’ যত শুনি, আরও খেতে চাই।
লেখাপড়া শুধু নামে, আসল তো খাওয়া
স্কুলে শুধু খেতে আসা, বাকি সব হাওয়া ।
স্বপ্ন অনেক আছে, জীবনের মাঝে
নিবেদিত প্রাণ হোক, শিক্ষার কাজে !!
আমার কবিতা / মেঘা বিশ্বাস
মেঘের সাথে খেলা আমার
নীল আকাশের পথে ।
সুজন বন্ধু পেয়েই যাব,
ফিরবো বিজয়-রথে ।
ইন্টারনেটে চেয়ে দেখি
বন্ধু নানান দেশে ।
স্বদেশ-বিদেশ এক হয়ে যায়
আন্তর্জালে এসে ।
হ্যালো, বলেই চ্যাটিং শুরু
আপন কিংবা পর—
কী আনন্দ, নেই ভেদাভেদ
নারী কিংবা নর !
রবির আলোয় বিশ্বভূবন
হবে আলোকময়—
বাংলা এখন বিশ্ব-বাংলা
হ’ল জ্যোতির্ময় !!
আমার কবিতা / মাধবী বিশ্বাস
ভাল ভাল খাবার খাওয়া—
প্রাণ খুলে গান গাওয়া ।
এই দুটো কাজ আমার প্রিয়
এই দুটো মোর চাওয়া ।।
সুখের দিনে বন্ধু আমার
দুখের দিনে সাথি ।
দিবাকাশের সূর্য সে যে
অন্ধকারের বাতি ।।
আমার কবিতা / জয়ন্তী দাস
নীরব রাতের আকাশ দেখে
স্বপ্নের জাল বুনি ।
চন্দ্র তারার ছবি আঁকি
রাতের প্রহর গণি ।
ছবি আঁকি নীল সবুজের
রঙের তুলিকায়—
পাহাড় নদী যাই পেরিয়ে
কোন সে ঠিকানায় !
দূর মধুপুর মোর ঠিকানা
জানে তো সবাই—
কেউ কি জানে রং-ঠিকানা
কোথায় খুঁজে পাই ?
আমার কবিতা / নন্দিতা পাল
বাংলা আমার প্রাণের ভাষা
বাংলা আমার মা—
এদের ছেড়ে একদিনও
থাকতে পারি না ।
এপার থেকে ওপার বাংলা
ছিল বহু দূর ।
রেখেছি এখন মনের মাঝে
হৃদয় মধুপুর ।
ছায়ায় ঢাকা, স্বপ্নে ঘেরা
সবুজ শ্যামল মা—
তোমায় দেখে ভুলেছি মা
সকল যন্ত্রণা ।
তোমার কাছে শিখেছি যে
বাংলা-মাটির গান—
তোমার কথা শুনলে যেন
জুড়ায় আমার প্রান !!
আমার কবিতা / অমিয়া চক্রবর্তী
ছুটি, ছুটি, ছুটি ও ভাই ছুটি এল রে—
লেখাপড়া ছেড়ে নতুন জুটি হ’ল রে ।।
নিকিতা আর নিশিতা ওই গাইছে ছুটির গান—
অমিয়া আর জ্যোতির নাচে উঠল দুলে প্রাণ ।
গুন্ গুন্ গুন্ সুর ধ’রে ওই ভোমরা এল রে
লেখাপড়া ছেড়ে এবার বুল্টি এল রে ।।
শন্ শন্ শন্ হাওয়ায় দোলে, নানা রঙের ফুল
পুতুল-সোনার সাথে এল মৌমাছি বুলবুল্ ।
ময়না শালিক দোয়েল টিয়া সঙ্গে এল রে ।
খাতা কলম ফেলে, কত বন্ধু এল রে ।।
বিকেল বেলায় মেঘবালিকা, নীল আকাশের গায়—
বলাকারা ফিরছে দেখো আপন কুলায় ।
রাখাল ছেলে বাঁশের বাঁশি বাজিয়ে গেল রে ।
ছুটির দিনে আমার খেলার সাথি হ’ল রে ।।
আমার কবিতা / মিনু বিশ্বাস
বাড়ি আমার কলিনপুর, নীলসাগরের পারে
আদিবাসী জারোয়া থাকে নয় তো বেশি দূরে ।
লোকালয়ে ঢুকে পড়ে সীমানা নেই জানা ।
আমার সীমা থেকেও নেই, এইটুকু মোর জানা ।
খেলাধুলা ভাল লাগে, লেখাপড়াও প্রিয়
টিচার যেন হ’তে পারি মঙ্লাশিস দিও।
শরীর-স্বান্থ্য থাকলে ভাল, তবেই হবে সুখ –
তা না হ’লে দিনে দিনে বাড়বে মনের দুখ ।
আমরা সবাই থাকবো সুখে, এই আমাদের পণ
মনের সাথে মন মিলিয়ে থাকব সর্বক্ষণ ।
ছায়ায় ঘেরা, মায়ায় ভরা আমার জন্মভূমি—
মাগো তোমায় প্রণাম জানাই সর্বশ্রেষ্ঠা তুমি !!
আমার কবিতা / তনুজা দাস
‘কবি’ আমি নই জেনো , কিন্তু ‘কবিতা’--
ভালবেসে বলেছিল পথিক-দেবতা ।
তনুজা আমার নাম মানে কন্যা—
কারও কাছে ঝড় আমি, কারও বন্যা ।
হাসির ঝর্ণাধারা প্রথম সকালে
নীরব অশ্রুধারা শেষের বিকালে ।
আমার কন্ঠে জাগে বাংলা’র গান ।
আমার স্পর্শে বাঁচে অসহায় প্রাণ ।
শিশুরা আমার প্রিয়, যেন ফুলদল
মায়াভরা দুটি চোখ, মন নির্মল ।
তোমাদের ছেড়ে যেতে এ মন না চায়—
তবু হায় যেতে হবে, হে প্রিয় বিদায় !!
আমার কবিতা / অঙ্কিতা বিশ্বাস
ভাল খাওয়া, ভাল থাকা কে না বলো চায়
আমিও তেমন চাই, আর কিছু নয় ।
শিক্ষা জীবনে আলো, যখন বুঝেছি
ঘরের বাইরে ঘর, তখন খুঁজেছি।
আজও সেই পথ ধ’রে, চলেছি একা—
কখনও বা কারো সাথে, হয়েছে দেখা ।
বন্ধু জীবনে কত, আসে আর যায়--
আসল বন্ধু পাওয়া, হ’ল বড় দায় !
সবুজ সবুজ দ্বীপ, আমার ঠিকানা—
যেথা খুশি সেথা যাই, নেই কোনো মানা ।
ভাল আছি, ভাল থেকো—এই শুধু চাই
তোমার মতো যে প্রিয়, কাছে যেন পাই ।।
আমার কবিতা / নিশা মৃধা
নিশিরাত, ঝিলমিল তারাদের মাঝে হারিয়ে যাওয়া
আর এক পৃথিবী, আমি চাই ।
কাজের জন্য নয়, কল্পনার সিঁড়ি বেয়ে আকাশে ওঠ।র
দৃঢ় সংকল্প ।।
এই আকাশে ওঠার স্বপ্নটাই তো জীবনের প্রকাশ ।
এটা কোনও দুঃস্বপ্ন নয় , বরং বলতে পারো কল্পনাবিলাস ।
এই কল্পনাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, অনন্তকাল।
মা, ডাকলো—বললো এভাবে স্বপ্ন দেখে দেখে আর কতদিন চলবে, নিশা
আমি বললাম- তুমি ভেব না, মা— আসছি ।
কতদিন হ’ল তোমার কোলে ফিরিনি ।
কত মরিচিকার পিছনে ছুটেছি তৃষ্ণার্ত পথিকের মতো !
কিন্তু, জল? না, জল পাইনি কোথাও।
তাইতো, আকাশের কথা বলেছি মা !
যদিও তা শুধু কল্পলোকের মিথ্যে আশ্বাস !!