একটি কবিতা লিখবো বলে
কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি জানালার পাশে
একটি কবিতা লিখবো বলে
তোমার কথা ভেবে করেছি বৃষ্টির অপেক্ষা।
সেদিন একটি কথা বলা হয়নি তোমাকে
যা তুমি শুনতে চেয়েছিলে
নির্বিকার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছিলে;
যেন আমি মুখ ফুটে বলি...আঁখি,
আঁখি তুমি ভালোবাসো আমারে ?
জবাবের অপেক্ষায় মুখিয়ে ছিলে,
হয়ত বলতে;হ বাসিতো,ভালো বাসিতো তোমারে,তুমি বুঝো না?
সেই কবে দেখেছি তোমাকে
বেনি করে বেঁধে ছিলে চুল
গাঢ় রঙের লিপস্টিকে
ঠোঁট দুটো করেছিলে লাল
আর যত্ন করে মেখে ছিলে চোখের কাজল।
সবাই বলতো তুমি নাকি সারাক্ষণ
সেজে-গুজে থাকতে।
সত্যি কি তাই,কার জন্য?
থাক সেসব কথা,
তোমার মনে পড়ে?
বাজার থেকে ফেরার পথে তোমার সাথে দেখা হতো তুমি দাঁড়িয়ে থাকতে রোগা চিকন জারুল গাছটার নিচে এ যেন তোমার নিত্য দিনের কাজ
দিনে অন্তত তিন বেলা সামনে না এলে
তোমার কি যে হতো আল্লাহ জানে।
তুমি মুখ ফুটে কিছু বলতে না।
সেবার মাধ্যমিক শেষ করে যখন বাড়ি ছাড়লাম তখনই বুঝেছিলাম কিছু একটা রেখে গিয়েছি বোধ হয়।
তোমার চোখের শান্তি,মনের শান্তি
সবই উধাও হয়ে গেল নিমিষেই।
একটু দেরিতে হলেও বুঝতে বাকি রইল না
তুমি আমাকে কত ভালবাসো।
তুমি বলেছিলে;আপনি এমন ক্যান,আপনারে না দেখলে এত কষ্ট ক্যান লাগে?
আমি নির্বিকার,
প্রশ্নের জবাব এত কঠিন হয় জানা ছিল না!
তারপর দিন যায় দিন আসে
সময়ের সাথে সাথে তোমার পাগলামী
আমাকে ঘিরে ধরে আষ্টেপৃষ্ঠে।
শুধু আমার চোখই জানতে পারে
ষোড়শী রমনীর চোখের ভাষা ।
এর পর কেটে গেল অনেক বছর
সময়ের নিয়মে আর দুরত্বের ব্যবধানে
এগিয়ে গিয়েছি তুমি-আমি
তুমি বড় হয়েছ বেশ,এখন সস্তা আবেগ-অনুভূতি তোমাকে আর নাগাল পায় না।
ছোট্ট সেই তুমি;যার না বলা কথা
আজ ডানা মেলে উড়ে বেড়ায় নীল আকাশে,
যা আমাকে বলতে পারোনি
তা বলে চলো অবিরাম
কোন আগন্তুককে অনায়াসে।
তুমি নামের যে বীজ বপন করে রেখে ছিলে
তা আজ অঙ্কুরিত;এক একটি বিরহ
চারা হয়ে জেগে ওঠে হৃদয়কে ভেদ করে।
তুমি কবে হারিয়ে গেলে বুঝে উঠার আগেই
নিজের ভেতর নিজেই বিলীন হয়েছি
আঁখি,
আমাকে ভেবে তোমার আঁখি জলে ভিজে?
নাকি ভালোই আছো?
হয়ত ভালো আছো,হয়ত না!
রাত্রি হলে মনে পড়ে
ঘুম ভেঙ্গে দেখি অন্য কেউ আমার পাশে ।
আচ্ছা বলতো আমি ছেড়েছি তোমাকে
না তুমি আমাকে?