তুরাগ-
কি আর বলব তাকে নিয়ে!
সে আমার শৈশব, আমার ছেলেবেলা।
আমার স্বপ্ন, আমার বাসনা।
হ্যাঁ ! সেই তুরাগ -
যার রূপে মুগ্ধ হতাম জানালার ধারে বসি,
যার কারণে আনতনয়নে আনন্দলোকে ভাসি।
রূপের আগুন ছড়িয়ে দিত যে মনের গভীরে,
মৃদু ছন্দপায়ে হাজির হতেম তাই
সবুজ গালিচা ঘেরা সে পাড়ে।
হ্যাঁ! ছোট্ট সেই স্রোতস্বিনী -
প্রকৃতির নীরবতা ভাঙিয়ে
এক চিলতে হাসি ফোটাতো
যে মনের গভীরে।
মনের অন্তরাল হতে ছিনিয়ে আনতো
রূপ-রস ছন্দময়ীতার সুরে।
তার পালতোলা সে নৌকোগুলো
যেন হিংস্র শার্দুল-
ঢেউয়ের তালে ভেসে চলত তারা,
আমি তা দেখে হতেম আত্মহারা।
কখনও ছলাৎ করে ভিজিয়ে দিতো
মাঝি গায়ে থাকা সে পরিধান।
কখনো পবন পালগুলোকে
করে দিত খান খান।
হ্যাঁ, বলছি সেই স্রোতস্বিনীর কথা -
বক, মাছরাঙ্গা আর পানকৌড়ি;
ছিল তাদের অবিরাম ওড়াওড়ি।
ঢেউয়ের সিংহাসনে
ভেসে বেড়াতো কস্তুরীকমল,
সূর্য্যিতাপে জলরাশি মনে হত
যেন মুক্তামহল।
সেই তুরাগ-
অমিততেজের সূর্য যখন
ঢলে পড়ে তুরাগের কোলে
মনে হয় আমার তুরাগ
সেজেছে সোনালী জলে মিলে।
হ্যাঁ! সেই অপরূপা-
যার রূপেতে মুগ্ধ আমি,
মুগ্ধ আমার মন,
যার রূপলাবণ্যে জুড়ায়েছে
আমার দু নয়ন।