আদুরী-
তোমার দেহের পরতে পরতে
কষ্টের ছাপ আমি দেখেছি।
লুকিয়েছো তুমি, তবু-
রাঙা দেহে কালির আঁচড়
আমার দৃষ্টি এড়ায়নি।

রঙিন জামা,চুলে দু'পাশে বেনী,
কাঁধে স্কুল ব্যাগ;
পুকুরের নোনা জলে ডুব-সাঁতার
কিংবা আলতা পায়ে
সখীদের সাথে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন
তোমারও ছিল।
কিন্তু-
দারিদ্রতার কষাঘাতে
কোমলমতি শিশুর চাররঙা ছাপা বই
তোমার হাতে কখনো উঠেনি।

অর্থাভাবী তুমি রঙিন স্বপ্ন দেখো।
ব্যস্ত রাজধানীর বুকে ছুটছে মানুষ,
ছুটবে তুমিও।
দারিদ্রতার কষাঘাত ছিন্নভিন্ন করে
মিলবে মুক্তিদশা, এই ছিল ধারণা।
ব্যস্ত রাজধানীর অলিগলি ঘুরে
একচিলতে ছাদ তোমার মিলেছে,
কিন্তু, মনঃস্কামনা মেলেনি।

ক্ষুব্ধ যন্ত্রণা আর কাতরতার নীরব তাগিদে
ছুটেছ তুমি গৃহকর্ত্রীর পানে।
দু' মুঠো ভাত আর মাথা গোঁজার
এক চিলতে ছাদ,
এই ছিল তোমার কামনা।
কিন্তু -
শত কিছুর পরেও
মিলেছে গৃহকর্মীর অপবাদ।
চুলটান, গালটান, গরম ছ্যাঁক
আর নীরব নির্যাতন।
পরিশেষে
দু'মুঠো বাসি ভাত, পাতলা ডাল
আর সবজির চচ্চড়ি।
রাত হতেই মদের আসর ;
অভিজাত পরিবারের নগ্ননৃত্য
আর যৌনতার করুণ আবেদন।
কষ্টের নোনা জলে সিক্ত তুমি ;
হারাবার নয়, তবু হারিয়েছো,
বিকিয়েছো দেহখানি।
বিকৃত যৌন লালসার
দূষিত স্পর্শে ক্লান্ত তুমি
মুক্তি চাও।

তোমার অন্তরাত্মা প্রতিক্ষণে কেঁপে ওঠে,
ডুকরে কাঁদে।
ফিরে পেতে চায়
সুখানন্দে ভরা মুহূর্ত,
সে আমি জানি।

    
     প্রথম প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর, ২০১৩
অনলাইন প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর, ২০২০