রমা রায় বলিয়াছিলেন বারকয়েক
কিন্তু বোসেদের বাড়ি আর যাওয়া হয়নি।
গেলে বোধকরি মন্দ হইত না।
রোজকেরে এই কাগজ বোঝাই ব্রিফকেস
আর গলায় পেঁচানো টাইয়ের নট ছাড়িয়া
ঝটপট পরিয়া নিতুম নীলচে রঙা ডেনিম
আর ধবধবে টি-শার্ট।
চোখে সানগ্লাস টানিয়া
আয়েশী ভঙ্গিতে দাড়াঁতুম,
পেছনে অপেক্ষায় থাকিত ল্যান্ডরোভার।
রোটারী ডায়ালে জানানো থাকিতো রেস্তোরাঁয়।
উনুনে চাপিয়ে জল,
মসলার গন্ধে বিভোর হেঁসেল।
কখন যেন হাজির হইবেন মেমসাব !
দরজায় দাঁড়াইয়া পাইক-পেয়াদা
নত মস্তকে কুর্নিশের অপেক্ষায়।
কেউ খাবার জল, কেউবা রুমাল,
কতকে সুগন্ধি ছিটায়ে চলেছে
আসিবার পথ ধরে।
অবশেষে চাতকের চাহনি ক্লান্তিক্লেশে
সাতকপালে মেয়েটা
রাজবিলাসের দোতলার সিঁড়ি ভাঙিয়া
চপল পায়ে নামিয়া আসিলো।
নাম যেমন অন্নপূর্ণা
রূপ-লাবণ্য মাধুর্যেও ;
যেন সোনার চামচ মুখে লইয়া জন্মেছে।
ডাগর চোখে ভোরের ফোটা গোলাপের মতো
এক চিলতে হাসি দিয়া
সামনে দাঁড়াইয়া কহিল, "চলুন মহারাজ "।
আমি অবাক বিস্ময়ে চললুম উদভ্রান্তের মত।
ললাট ছোঁয়া কেশ বাতাসে উড়িতেছে দিগ্বিদিক,
ভোরের সোনালী আলো মিলিয়াছে
সোনারঙ্গা গাউনের পাটে।
হঠাৎ মুখ ঘুরাইয়া অন্নপূর্ণা কহিল,
কেমন অরূপ? আমায় ভালোবেসে ভুল করিয়াছেন?
চকিতে কাটিয়া গেল ঘোর।
না ! এমন কিছুই ঘটেনি।
দিনভর কেস লড়িয়া দু-চার পয়সা
যাহা পাই তাহাই যথেচ্ছ।
মধ্যবিত্ত এই মোর
সাহসের জোর অতটা কুলোয়নি।
তাই রাখিতে পারিনি তাহার আবদার।
প্রথম প্রকাশ :
পৌষ ০৫, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
ডিসেম্বর ২০, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ