ক'টা বন্ধু মিলে দাড়িয়ে আছে।
হঠাৎ একটা ছেড়া জামা গায়ে,
লুঙ্গি পড়া একটা ছেলে এসে
একটা ছেলের হাত ধরে।
তখনই ঐ ছেলেটিকে
বকা দিল চড় মেরে
ছেলেটা কেঁদে ওঠে
আর কান্নাস্বরে বলে-
কি আর করছি?
হাতটাই তো ধরছি।
লক্ষ করছিলাম আমি।
দৌড়ে গিয়ে ছেলেটাকে,
জড়িয়ে দরলাম ভালবেসে।
বললাম তোর কি হয়েছে?
ছেলেটা কিছু বলতে চায়নি আমাকে
শুধুই কঁদেছে।
অতপর সব বলল আমাকে।
যা আমার সামনেই ঘটেছে।
কজন ওকে ধাক্কা মেরেছে
পড়ে গিয়ে মাথায় ব্যাথা পেয়েছে।
অতপর বললাম-
-কিছু খাইছিস?
-না খাই নাই।
-কিছু খাবি?
-আমি বাড়িত যামু,চাইল নিমু মার লইগ্গা।
অতপর আমি ওরে,
দশ টাকার নোট দিয়ে,
বললাম যা বাড়ি চলে।
কিন্তু ও গেল না চলে
বলল আরও কটা টাকা লাগে।
আমি আসলাম ফিরে।
কিছুক্ষন পরে আবার
দেখা হলো ওর সাথে
মোহাম্মদ উল্ল্যাহ স্যার আর
সাকিব ছিল সাথে।
নিয়ে গেলাম ওকে
একটা ক্লাসের ভিতরে।
শুরু হলো সাক্ষাতকার-
-নাম কি তোর?
-রাজীব
-বাপের নাম কি?
-কালু মিয়া
-বাপ কি করে?
-মরছে মেলা দিন আগে।
-করত কি তোর বাপে?
-কাম করত মাইনসের ক্ষেতে।
-তোর মায় কি করে?
-মায় লুলা হাটতে পারে না।
-বাসায় কে কে আছে?
-আমি মায় আর আট মাইসা বইনে।
-বাড়ি কই তোর?
-চেয়ারম্যান বাজার মুগল মাঝি বাড়ি
-ঐটা তোদের বাড়ি?
-না আমরা ওরকাইত থাকি।
-এখানে আসলি কি করে?
-গাড়ীত কইরা।আল্লাহ ওয়াস্তে আনছে ভাড়া নেয় নাই।
-দোকানে কাম করবি
-না মার ধারে থাওন লাগে
-সকালে খাইছস?
-না খাই নাই।
-গতকাল দুপুরে খাইছিস কি দিয়ে?
-কাঁচকি মাছ দিয়া।
-কিনছস কত দিয়ে?
-ষাট টাকা দিয়া।
-টাকা পাইলি কই?
-লইছি মাইসের তেন খুইজা।
আর থাকতে চাইলো না,
দৌড়ে গেল চলে।
দৌড়ে গেল সাকিব, দশ টাকা নিয়ে।
নিতে চায়নি টাকা সে
ভয়ের কারনে।
ও ভেবেছে,আমারা ওকে
দিব ছেলেধরার কছে বেচে।
অনেক বুঝিয়ে তাকে,
সাকিব টাকা দিয়ে এসেছে।
টাকা পেয়ে,গেল চলে।
শুনলাম সব কিছু।
হিয়ায় পেলাম ব্যাথা।
তবুও হয়না অনেকের,
ওর প্রতি একটুও অনুসূচনা।
এমনি করা এ সমাজে,
অনেক শিশু ঝরে পড়ে।
স্কুল বয়সে তারা,
ভিক্ষায় নেমে পড়ে।
কাজ করতে চায় না তারা।
ভিক্ষা যে, সহজ পেশা।
সমাজের এ অবস্হা,
কখনও কি শুধরাবে না?