দ্বিমাত্রিক চায়ের দোকান
রতন সেনগুপ্ত
--------------------------------
জলে ভাসবার আগে মরাকাঠ ভাসে বেঞ্চির ওপর
পাতলা মেঘের মত উড়ো রসবোধ, উতরেছে শোক
হাড়-মজ্জা জুড়ে নির্লিপ্ত যোগাযোগ
এ চায়ের দোকান কেন খোলে না অষ্টপ্রহর --- এইটুকু আপশোশ এদের
দ্বিমাত্রিক চা শুধু  এখানেই মেলে

সারারাত ঘুঘুর বাসা আশেপাশে, শিকারি চিল মাথা ঘুরে দেখে
হুঁশহাশ  নেই, নির্মিত সর্বনাশ চাপা ছাদের কোটর
চোত্রা-ঘুম ভাঙ্গে গভীর ভোর, রোমাঞ্চ নেই, রোদ উঠলেই বাঁচে
দ্বিমাত্রিক চায়ের দোকান খুলে যাবে
লেজনাড়া লেড়িকুত্তা খাস্তা বিস্কুট খাবে  
চোখের ওপর দ্বি-মাত্রিক চা আর স্বদেশ
একসঙ্গে উল্লম্ফন সেরে নেবে

অর্থকষ্টে  ভোগে বেচারি জীবন --- দ্বিমাত্রিক চায়ে ক'পয়সা আসে
হিসেব গোলাতে পারে, বলতে পারেন নির্বোধ
ছ্যাঁচরা বলবেন না, খিচুড়ি কোথায় দেখলেন
সাপ যদি ঢুকে পরে, বেঞ্চি ছেড়ে লাফ দিয়ে সবাই টেবিলে উঠবেন
ও কিন্তু লাঠি দিয়ে মেরে দেবে, টেবিল বেঞ্চি মুছে বিনা গর্বে দেবে দ্বিমাত্রিক চা
আপনি কৃতার্থ হলে ভাল --- না হলেও

এখানে নির্দ্বিধায় ঘুরপাক খায় ভারতবর্ষ, পৃথিবীও ঠুকরে দিয়ে যায় -- ছাঁকনি নাচে হাতে
প্রেমিক প্রেমিকা হাসে, বেঞ্চি চোখ টাটায়
হরিবোল হরিবোল শ্মশানযাত্রী কমে গেছে

প্রতিশ্রুতি পেলে জীবন ছোটে --- চোখের তারায় রেসকোর্স
দ্বিমাত্রিক চায়ের খদ্দের ক্ষেপে লাল  --- এভাবে কি চলে?
......বউটা পোয়াতি হয় ঘনঘন
ফিরে এলে সব জল, 'কোথায় যাস বাবা যখন তখন --- দে এক কাপ'

ঝাঁঝালো খুন্তির চোপা, অকর্মার তালিকা রেখা
চেয়ে দেখে একে অপর
এ ভব-সংসার বৈরাগ্যের ফোঁটা চন্দন
দ্বিমাত্রিক হাসে আমি কত্টা মেটাবো  
শ্মশানযাত্রী কমে গেছে