দু'পয়সার কাগজ আর টাকা দশেকের কলম
হাতে নিয়ে নিব ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
যত্তসব রাজ্যের নীতিকথা অহেতুক ছন্দের বাড়াবাড়ি
গোটা কয়েক পদ্য-গদ্যে্র মিশেলে ছাইপাশ লিখে
নিজেকে বড় সাহিত্যিক ভাবতে শুরু করেছি!!!!!!
অথচ আমি সাহিত্যের কীইবা বুঝি???
ঘোড়ার ডিম নাকি ঘূড়ির ডিম এই পার্থক্যটাই
কোনদিন বুঝে উঠতে পারিনি.........
সেই আমি কিনা আবার কবি! ধরনী বড়ই সেলুকাস!!!!!!!!!
কি দরকার এই সব লেখালেখির
যা মানুষের কোন কাজে আসে নি???
ভেঙ্গে পড়া সেই সুবিশাল ইমারতের ধ্বংসস্তূপে
যখন আমার জ্ঞাতি ভাই বোনেরা
বেওয়ারিশ লাশের মিছিলে জোরালো স্লোগানমুখর,
যখন অসহায় এক মায়ের গগনবিদারী
ইস্রাফিলের সেই চিৎকারের মতো
বুকফাটা আর্তনাদ এই কবিতার ভাষা হতে পারেনি,
যখন এক বাবা তার রুধিররূপী ঘামে মানুষ করা,
কো্লে-পিঠে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সেই ছেলে কিংবা মেয়েটির
থেঁতলে যাওয়া লাশ দেখে
আনমনে অদৃশ্য বিধাতাকে দোষারোপ করে,নিজের মৃত্যু কামনা করে
জগত বিশ্বের সবকিছুকে অভিসম্পাত করে
এই কবিতা তো শুধু সেই অভিশাপের বুদবুদ থেকে
জন্ম নেয়া এক বিষধর কালসাপ!!!!!!!!!!!!!!!!!!
রাতদিন এক করে দিয়ে যে ভাইটি
শুধু ছোট্ট বোনটির বিয়ে দেবে বলে
তার অর্থলো্লুপ শ্বশুরপক্ষ কিংবা
ঘুণেধরা এই লোক সমাজের মুখে
অনেকটা জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মধ্যে আটকে পড়া
বোনটাকে সুপাত্রস্থ করার জন্যে
মাথার ঘাম পায়ে ফেলেছিল
সেই ভাইয়ের বিকৃত মরদেহ দেখে
ছোট বোনটির হৃদয়গ্রাহী কান্না
যাকে একটা জ্বালাময়ী কবিতার অনুপ্রেরণা দিতে পারেনি
সেই আমি নাকি আবার কবি! হাস্যকর পদস্খলন
এক মধ্যসত্ত্বভোগী পদ্য-ব্যবসায়ীর!!!!!!!!!!!
আমি সেই অবিবাহিত বোনটির মৃত্যুর কথা লিখতে চাইনি
যে তার বুড়ো মা-বাবা, ছোট ভাই-বোনগুলোর মুখে দু'মুঠো গরম ভাত
তুলে দেবার জন্য নিজের সব স্বপ্নকে
নিজের হাতে মুচড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে!!!!!
সেই মা-হারা, বাবা-হারা অবুজ শিশুগুলো
অনেকটা না বুঝে কেদেঁ চলেছে
আমি তাদের চোখাচোখি হওয়ার মতো সৎ সাহস অর্জন করতে পারিনি..................
এভাবে আরো কত মৃতের গল্প লেখা যাবে
কত আহতের,পঙ্গুর আর্তনাদ কবিতা হবে
তাদের গনকবরের ছবি, লাশের ভিডিও দিয়ে
বিজ্ঞ সংগীতজ্ঞের মর্মস্পর্শী গান হবে!!!
যেটা হবে না শুধু আর কিছুদিন পর
খবরের কাগজ কিংবা রেডিও-টিভি চ্যানেলে
যখন ব্রেকিং নিউজে এদের কথা দেখা যাবে না শোনা যাবে না
তখন এই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কি হবে তা জানা হবে না!!!!!!!!!!!!!
সুনীলের কথাটা আবার সত্য হয়ে ধরা দেবে
"স্মৃতি বড়ই প্রতারক" এই কথার ফাঁকে
আমরা বেরিয়ে পড়ে নিশ্চিন্তে শয্যাসঙ্গিনীকে পাশে নিয়ে
ঘুমিয়ে থাকবো, যেমনটা আইনের ফাঁকফোকরে
মার্ডার কেসের আসামিও বেকুসুর খালাস পেয়ে যায়..................
শেষ করতে ইচ্ছে হচ্ছে না এই সব অসংগতি নিয়ে লেখালিখিটা
তবুও বোধহয় শেষ করতে হয়, সময়ের প্রয়োজনে
নিয়মের বেড়াডোরে,এক্কেবারে ইচ্ছের বিপরীতে..................................................