বাতাসে হেলিয়া সন্ধ্যা-সকালে রজনীগন্ধা ফুটি
গাঁধা ফুলগুলি তাহার সহিত গড়িয়াছে প্রেমের ঝুটি
সিক্ত নীলাম্বরী রোদ্রে দিয়াছে এ বাড়ির মেয়ে কেউ
রোদ্রতাপে ঝিলিক দিয়াছে তাতে বাতাসে রঙের ঢেউ
সুুই-সুতো দিয়ে আকিতেছে মেয়েটি নকশী কাথার ফুল
বাতাসে উড়িয়া মুখে পড়িতেছে কখনো দু’একটি চুল
কৃষ্ণচুড়ার ডালে বসিয়া ডাকিছে “বউ কথা কও” পাখি
পাখিটিরে মেয়ে রাগাইয়া দিতেছে বউ কথা কও ডাকি
রেগে গিয়ে পাখি ডাকিতেছে এবার ঘরের দোরে এসে
হাটুতে মুখ রাখিয়া মেয়েটি তখন হাসিতেছে বসে বসে
সিড়িতে বসিয়া, বেণী বটিয়া তৈল মাখিতেছে চুলে
আমার কবিতা পড়িতে গিয়ে বারে বারে যাচ্ছে ভুলে
‘পচা কবি’ বলে গালি দিতেছে মোরে করিয়া নিজে ভুল
বলে কি! কবিকে যদি পেতাম তবে ছিড়িতাম মাথার চুল
এমন সময় আসিলাম আমি হঠাৎ পানির পিপাসা পেয়ে
ভ্রু কুচকে তাকাইয়া রহিল মেয়েটি আমার পানে চেয়ে
নিচু স্বরে বলিলাম তাকে, এক গ্লাস ঠান্ডা জল হবে?
সম্মতি মাথা নেড়ে কহিল মেয়েটি একটু বসুন তবে
কাঁচের গ্লাসে পানি আনিল মেয়েটি মৃদু পায়ে হেটে
“তোমার হাতে এক গ্লাস পানিতে কি পিপাসা মেটে”
জলপান শেষে বলিলাম কথাটি মিটিমিটি হেসে
কি যে বলিবে মেয়েটি পাইল না তখন দিশে।
তিন দিন পরে দেখিলাম ছাদের উপর গিয়ে
সাঁঝ-বিকালে নীল শাড়ীতে; ছাদে এসেছে লাজুক মেয়ে
শিউলি-জবা ফুল একেছে; তাহার রাঙা মেহেদী হাতে
কালো চুলের বেণীর ভাজে; গুজেছে ফুলের পাপড়ি তাতে,
কাঁচের চুরি হাতে পরে, মিন্দি বাটে রিনঝিনিয়ে
কি সুধা তার বদনখানে; লই সে আমার মন ছিনিয়ে,
মায়াভরা তার মুখখানিতে; ঘাম জমেছে মুক্তা হয়ে
লুকিয়ে আমি দেখছি বলে; পালিয়ে গেছে লজ্জা পেয়ে।