বাবুদা সেদিন স্কুলের অষ্টম ঘন্টার বেলটা
সপ্তম ঘন্টায় বাজিয়েছিল বলে আমার তো বেজায় খুশি।
বয়স অনেক, ভুলোমনের বয়সে পড়েছে বাবুদা।
এক ঘন্টা পরিত্রাণ পেয়েছিনু সেদিন বাবুদার জন্যে।
আহ্,কি আনন্দ!!
কেরানি ব্যাটা হেডমাস্টারের অনুপস্থিতে দু'একটা বকনু দিয়েছিল বটে,
তিনিও কি আর মনে মনে কম খুশি হয়েছিলেন?

সেদিন চেয়ারম্যানেকে স্বেধে ফাঁকিবাজ চৌকিদার
কাবিখার কর্মীগুলা দু'ঘন্টা আগেই ছেড়ে দিছিলো।
পরেদিন থেকে তো সে চৌকিদারই চেয়ারম্যান!!

বলি, বিধাতা নির্মম হাতে যে কর্ম খেলায় মজে আছে
কি সুখ তাতে তিনিই ভালো জানেন।
রক্ত মাংসের দেহ অথচ অসম্পূর্ণ এ আশরাফুল মাকলুকাত,
কি যন্ত্রনায় পার হয় চব্বিশ ঘন্টা।
জীবনের মায়া ত্যাগি যদি একদিন ভীড়তেই হয় পাড়ে
যারা জীবনের তৃপ্ত স্বাদ পেল না,
তারা তো জীবন মানে যন্ত্রনা'র বাইরে কোন পদ্যই
রচনা করতে পারলো না।
একদিন যদি যেতেই হয়,
একদিন যদি মায়া ত্যাগ করতেই হয়,
ঐ চব্বিশ ঘন্টার দু'ঘন্টা কমিয়ে দিলে
কি এমন বড় ক্ষতিটা হয়!!!

বুঝি ,বিধাতার কারো করুণার দরকার হয় না বলে।
বুঝি ,বিধাতার উপর কোন কর্তাআ নেই বলে।
বুঝি, তার কোন কর্মচারী এমন আর্জি করে না বলে হয়তো।
অবহেলা মেনে নিয়েও
একটি জীবন আর একটি জীবনের উপর ভর
করে চলার কি কোন স্বাধ থাকে?
যদি কিছু থাকেই, সে বিষাদ।
অথচ এমনই জীবন ওয়ালারা দিব্যি পার্লারে কাড়ি কাড়ি
টাকা খরচ করে।
সানগ্লাস কোর্ট টাইয়ের উপর প্রতিযোগিতা চালাতে ব্যস্ত প্রতিনিয়ত।
কি দোষ, কি অপরাধ ওদের বিধাতা?
কেনইবা ওদের পার্লারে যাবার অধিকারটুকু দিলে না,
কেন বা তাদের কোর্ট টাইয়ের বায়নাটাই দিলে না।
কি অদ্ভুত তোমার বিচার!!!
চার চাকার চাবিওয়ালাদের নির্বাহের নাম দিয়েছ জীবন,
দুই চাকার হুইল চেয়ার মালিকের যাতনার নামও দিয়েছ জীবন।
সত্ত্যিই অদ্ভুত তোমার বিচার।



(পক্ষাঘাত পূর্ণবাসন কেন্দ্র ঘুরে)
১১/১০/১৮