সহজ সমাধান
রাওয়াহা রুমি
মোরে হেথা সাধিলা তুমি কবিতা পড়ার লাই
কবিতা আর কি করিবো বলো কবিতায় যে নাই
আচ্ছা একটা গল্প ধরি
গল্প যদিও সহজ তার মর্ম কিন্তু ভারী।
একদিন বিকেলে চা পানের কালে
এক বুড়ো ব্যাটা হাজির
বয়সে সে ঝুলে গেলেও চেহারার হয় না নজির।
চুল গুলো তার বাদামীই হবে ,ফর্সা করে বদন
চোখের কোটরে কেমন যেন ঘুমায় না বহুদিন।
স্যুট বুট আর বেশ বলে দেয় সে কোন মহরাজ,
তবুও সে ব্যাটা ঝলসান যেন অনলে দগ্ধ রোজ।
কহিলাম, এক কাপ চা...
কহিলাম, বোসো বাছা।
একটু খানি বোসো,
খানিক একটু রোসো।
সে কহিল,
না না আমার ভীষন তাড়া।
কিছু বলিব তার আগেই ধরিলো বিদঘুটে ছড়া-
এখনি আমার কিনঝাল পড়বে বারোদিয়াঙ্কায়
আরো ৫ টা জ্যাভেলিন ছেড়েছি মারিউপুল ঠিকানায়।
অস্ত্র দিবে বেইজিং আমায়,
তেল দিবে তেহরান।
দেখেন এবার কেমনে করি পশ্চিমাদের বান।
M-২৯ PM-৪৩ ছুইনা ওসব
খেলনা মনে হয়
নিউইয়র্কে ও ফেলি দু একটা
বলেন না কেমন হয়?
হা! হা! হা!
মেজাজটা বিগড়ে গেলো...
ধুর মিয়া চুপ করো।
দেখেছো এখন কেমন বিকেল
সুর্য যায় তলিয়ে ?
নীলের আকাশে দেখলে কেমনে গেধুলী দিলো আকিয়ে?
ঐ যে দেখো সন্ধ্যাতারা ইতস্তত করে রোজ-
এসব রেখে এখন কি তোমার প্যাঁচাল শোনা ফরজ?
তোর জোর করে উবু হয়ে বসে জড়িয়ে ধরলো পাও
কহিলো দাদু এসব থেকে আমারে তুমি বাঁচাও।
আকাশের দিকে উন্মাদ তাকিয়ে নেইনি কভু শ্বাস
খালি কেন যেন আমার বুকেতে ক্ষমতা লভিবার আশ।
বললাম বাছা বোসো,
চা খাও,
ও যে জুড়িয়ে গেলো…
আচ্ছা বাপু বলোতো আমায়
খুব ছোট বেলায় তুমি
কবিতা কি পড়েছো?
পড়া না হলে স্যারের হাতে
কানমলা খেয়েছো?
ঘুড়ি ছেড়ার কষ্টে কখোনো
না খেয়ে থেকেছো?
বাবার সাথে হাটে যাবে বলে
কেঁদে ধুলো লুটেছো?
দু টাকার আচারের তরে
মায়ের কভু আচল টেনেছো?
অথবা দাদুর পাকা দাড়ি ধরে
ভীষন টেনেছো?
এসব কি পড়ে মনে তোমার
নাকি যুদ্ধ জাহাজ?
যদি তোমার না মনে পড়ে তবে
কবিতা পড়া ফরজ।
কবিতা না পড়ার দায়ে যদি
রোজ খেতে কানমলা
তবেই কেবল বুঝতে তুমি
কবিতার কি যে জ্বালা।
কবিতার পাতা খুব ভয়ানায়ক
সে মহা যন্ত্রনা-
কবিতা যার হৃদয়ে থাকে –
যুদ্ধে তারে সাজেনা।