এই ! বড়লোকের বেটি!
সকাল কী এখনো হয়নি?
মহারাণীর মত ঘুমিয়েই যাচ্ছ
মান-সম্মান কী সব, করবে মাটি?
ত্রিশ বছর গত
আমিও এসেছিলাম এ বাড়ি
মাথা করিয়া নত।
লজ্বার মাথা খাইনি কভু
প্রাতকালে ছেড়েছি শয্যা
বুঝনা কেন? তুমি কোন কূলের বধু!
ছেলেকে বলি ! মাথার উপর তুলিস না আর,
আল্লাদ করে ঘরে এনেছি বউ
সারাজীবন ঘানি টেনে শরীর করেছি চুরমার
ফিরে দেখলো না কেউ।
আয়েশে কাটাবো বাকী জীবন
এতটুকুই ছিল আবদার।

ক্লান্ত দেহে শান্ত চোখে
তাকালো শাশুড়ীর মুখে
বলিল! মা’গো! সারাদিন খাঁটুনির পরে
সকলের আহার নিশ্চিত করে
বেঁচে যাওয়া অন্নখানি দিয়েছিলাম উদরে ।
পরিস্কার করে সকল এটো-বাটি
নিশ্চিত করেছি, সকলের শয্যা পরিপাটি ।
ক্লান্ত দেহে ঘুম যখন নামিল চোখের পাতাতে
তোমার ছেলে আসিল মা’গো স্বামীত্ব ফলাতে ।
এভাবেই চলছে মাগো দিনের পরে দিন
রাতের পর রাতে।
তুমিও মা’গো পার করে এসেছো এ জীবন
সত্যি করে বলো মা’গো ! এ-কি আসলেই জীবন?
জীবন বলা যায়? হাহাকার কী নেই কোন?
নেই কোন আত্ম-রোদন?
মা’এর কাছেই সন্তানের প্রথম শিক্ষার ভিত্তি
নারী হয়ে কখনো কী তুমি, করেছ চেষ্ঠা
করতে লাগব নারীর এ দূর্গতি?
মা’ই পারে গড়তে সন্তান, বিবেধ ঘুছাতে
চলাতে-বলাতে-খাওয়াতে-পড়াতে
হাসিতে-কাঁদিতে-খেলাতে-নাচিতে
বাধা যদি কভু আসে, পুরুষ তান্ত্রিক হতে
সন্তান মানুষে, দাড়াতেই হবে খরগ হস্তে।
তুমিই পার মা’গো নারীকে দিতে মানুষের যোগ্য সম্মান
তুমি মা’গো যুগে যুগে সৃস্টির মূলে, তুমিই মহান।