কবি ও স্বর্ণচাঁপা
রণজিৎ মাইতি
---------------------
আমার ঠাকুমা ছিলেন গদ্য কবিতার জনক,সরি জননী।
তিনি উঠোনে দু-দুটি স্বর্ণচাঁপার চারা রোপণ করেছিলেন,
মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন-
যেদিন গাছ দুটি ভরে উঠবে পুষ্পে-পত্রে
সেইদিনই হবে প্রকৃত কবিজন্ম।
তাই নিবেদিত প্রাণ ঠাকুমা
ধুপের মতো পুড়তে পুড়তে
নিংড়ে দিলেন মেধা ও রক্ত-মাংস,
এবং একই আশ্রমের সাধক হিসেবে
স্বামী নামক গুরুভাইকে দিলেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ।
আনাও শ্লেট ও খড়িমাটি,
বর্ণপরিচয়,কথামালা,বোধদয়....
গণিত না শিখলে এদের ঠকতে হবে পদে পদে,
সুতরাং আনাও ধারাপাত
কবির গুণমুগ্ধ হিসেবে
ঠাকুর্দাও অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন প্রতিটি আদেশ।
উপযুক্ত পুষ্টিগুণে
একদিন গাছ দুটি খিলখিল হেসে উঠলো,
রূপের অনির্বচনীয় আলো
পথক্লান্ত পথিককেও করলো শ্রান্ত।
বিনয়ী ঠাকুমা কেবল ফোকলা দাঁতে হাসতে হাসতে বললেন,--
আমি কবি নই,আমি গদ্য কবিতার প্রতিভূ,
প্রতিটি স্বর্ণচাঁপার জননী,আমিই ভগবতী দেবী।