সমাপ্তি
----
রমেন মজুমদার, ৩১/০৫/২৪
----
আকাশে সাজিল মেঘ কালো তার ছায়া,
মোহের এ'সংসার ঘিরে চারিদিকে মায়া।
দুলিছে প্রাণখানি;
তাও আমরা জানিশুনি,
কী জানি কি শেষ দিনে ঘটিবে বরাত!

আসিয়া ভব ঘরে, যাবে সবে পর করে...
স্বজনে বুঝি অশ্রু; ফেলে থরে থরে।
করিলাম কত কাম;
আছে কী তার দাম?
সমুখে কালো মেঘ জমিছে এ'বেলা,
জন্মপরে কর্ম করে ছুটিবে একেলা

জীবন বোধের খেত কি করেছি হেথা!
পলে পলে স্বার্থ ভরা দিবসের সব ব্যথা,
ভাবিতে ভাবিতে বেলা চলে গেল বুঝি;
আমারে লহিবে কে?
--আমি তারে খুঁজি।।

ঢেউ ভরা নদী বুক; কোথাও কি আছে সুখ?
বিবেকের আদর্শ আজ হলো জলাঞ্জলি।
এপারেতে যাহা পাই-
ওপারেতে শুধু ঠাঁই---
নিদান কালেতে আমি কাহারে শুধাই।।

জনম-যৌবন কাল--ভরা দেখি সবে জঞ্জাল!
ওই বুঝি আসিতেছে বাঁধিতে মহাকাল!
কোনো দিকে পথ নাই--
ভরা জলে সাঁই সাঁই;
ফসলের মাঠ বুঝি ডুবাইবে কাল।।

এতদিন যে ফসলের ভরেছিলাম মাঠ,
গগনের দুর্যোগ এসে করিবে লোপাট!
হইবে করুণ বন্যা!
--পথ নাহি পাবে ধর্ণা
পাকা ধান মাঠে রবে,চুকে যাবে পাঠ।


আবছা হইবে আঁখি!--রবেনা কিছুই বাকি!
সময়ের নাও এসে ভিড়াইবে ঘাটে---
চিনিতে পারিবে তুমি?-
স্বজনের চাষ ভূমি!
নিদান করুণকালে শোয়াইবে খাটে !!

তুলিবে তোমারে মন; কোথা রবে কোন ধন!
লয়ে যাবে সাথে করে কীর্তির ফসল!
তুমি রবে খাটে শুয়ে;
কোন জন সেই দু'য়ে--?
পিছেতে উঠিবে শুধু কান্নার রোল।।

ওগো তুমি কে আসিলে-; কোথা নিয়ে  ভাসাইলে?
কোন সেই মহানদী উত্তাল সাগর ?
উঠিবে ঝড়ের গতি;
পিতা-পুত্র দারা-পতি--
পাবে না খুঁজে তখন,আপনার সাধের ঘর।

আসিবে যে মহাকাল!--টুটি চেপে বাঁধিবে কাল
অদৃশ্য চোখের পাতায় খুঁজিবে কাহারে ?
আকুতি যতই করো;
মুক্তি নেই ঐশী স্মর;
রাখিবে না তোমারে!
বারেক ভিড়িবে না তরী--ছুটিবে ওপারে।।

যাও তুমি যেথা দূরে,মুক্তি নিয়ে অভিসারে;
যারে খুশি তারে তুমি লয়ে যাও পারে....
আমার আকুতি রেখে
জমিনের আল বেঁকে--
লয়ে যাও ফসলের গোছানো সে আঁটি ।।

শ্রাবণ আকাশ জুড়ে,ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
ছড়াইয়াছে কালি!
একবার ঘাটে এসে,লও মোরে হেসে হেসে--
যেটুক কুঁড়ায়েছি আপনার ফসল!
তুলিয়া দিব তাহা--
শেষ মোর আছে যাহা!
এ'মিনতি শেষে আমি হৃদে শান্তি পাই।

তুমি কি বলিবে মোরে?- ঠাঁই নেই তরণী প'রে;
এ'কুলে ফেলিয়া তুমি যাবে চলে ধীরে।
স্বজন রহিল যারা;
কাঁদিয়া হইবে হারা!---
সোনার ফসল টুকু নিয়ে যাবে কেঁড়ে।।

ওগো তুমি কোন রূপে আসিবে তখনে--
চিনিতে পরিব কী রূপ খানি মনে---?
বিরহ ক্রন্দনে রত;
সকলের মনে ক্ষত!
হুতাশন ব্যথা নিয়ে হইবে না আহার!
জ্বলিবে না চুলা ঘরে, তুমি তখন পরপারে;-
সারা ঘরে অশ্রু চোখে কাঁদিবে স্বজন।।

-----সমাপ্ত--