নগ্নতার সুখ সাগর
------
রমেন মজুমদার, 22/06/2024

আবার সেই অন্ধকার!  নগ্ননির্জন রাত!
আকাশ ঘোর অন্ধকার,
তুমি সেই রহস্যময়ী আলোর সহচরা;
তোমাকে ভালোবেসেছি সূর্যের মতো,
পুড়ব বলে শায়িত অন্দর!-- অথচ তুমি
প্রথম রজস্বলা!
দেখিনি কোনদিন এ'চোখ খুলে...
নিবিড় অন্ধকারে ফাগুনের পুষ্পপরাগ
তুমি কি সেই অন্ধকারের রহস্যময়ী নারী ?

দুহাত বাড়িয়ে দিলে আমার দুর্বলের কাছে,
পিপাসিত নগরীর বিলুপ্ত ধূসর যৌবন প্রাসাদ!
হৃদয়ে দিয়েছে নাড়া কঙ্কাল বিদিশার পথে..
হার না মানা ভারতআত্মার প্রতি--
শোষণের ক্লান্তির জৌলুস ফুরিয়েছে ব্রিটিশের!
তরঙ্গে উঠিছে ঢেউ যৌবন সাগরের...
একদিন ওরা এসেছিল---
নিয়েছিল জোড়করে তোমার স্নেহের আঁচল তুলে নগ্নতার মাটি।

কোথা সেই প্রাসাদ!--
আঁধারের বুক ফুঁড়ে তুলেছিল দুগ্ধশিতল সাগরের ফেনা!
মূল্যহীন করেছিল প্রেমের মসনদ...
পারস্য প্ৰবাসীপ্রেম, কাশ্মীরী শালে ঢেকে দিয়েছিল ভারতাত্মার নিটোল মুক্তোর সাগর।
আমাদের ছায়ামাখা রঙ্গিন চোখ বিলুপ্তি এসেছিল দাদরি মেঘের আবেশে....
মৃত চোখ এঁকেছি রঙ্গিন স্বাধীনতা...

হলুদ মিহিরোদের কাকাতুয়া ডাক,
নির্জন আঁধারের বুকে প্যাঁচার দুটি মার্বেল চোখ!
আর তুমি ছিলে এলোকেশে ছায়াহীন নারী;
ওরা পরাজিত হয়েছিল একটি ন্যাংটো বালকের কাছে,যার নাম ডাক ছিল সুভাষ।

কত ব্রজঙ্গ বীরাঙ্গনার অবনত শাড়ি
কয়েছিল মোহতার স্বাধীনতা আমার চিরসুখ!
কামিনী সমুদ্র সেই চিরআঁধারের পথে...
কাপ্তানি কুর্তার শেরোয়ানী খিলান---
গম্বুজের বেদনায় কেঁপেছিল মন্দির!
সহস্র হরিণের ছাল রাজন্যের চামচার ঢোল!
আঁশফল তুলে নিয়ে লুটেছিল প্রেম!
হৃদভাঙা কান্নার শব্দ খুঁজেছিল প্রেমের পাণ্ডুলিপি।

আজও কাঁদে রুগ্নতার অন্ধকার!
এ'ঘর থেকে ও'ঘরে আরও বহুদূরে.....
ক্ষণিকের সুখলুটে কেঁপেছিল মসনদ!
আয়ুহীন বোবা কষ্ট ধুসরের কক্ষপথ!
স্তব্ধতা ও বিস্ময় লাজে মরেছিল আঁধার!
রক্তাভ নিখিলের দুরন্ত লাল পলাশ
ফুঁটেছিল আঁধার ফুঁড়ে নগ্নতার দুয়ারে।

বিচ্ছুরিত ক্লেদ গালিচায় মেখে--
নগ্ন শেফালির প্রমত্তা উজাড়!
সাদা গ্লাসের বুক জুড়ে মেরুণরঙ্গামদে
তুলেছিলে বেদনার চরম ইতিহাস!
পর্দায়, গালিচায় রক্তাভ রৌদ্রের বিচ্ছুরিত
ক্লেদ!
তোমাকে ছুঁয়ে ভিখ মেগেছিল নীলবিষ!
খুঁজেছিল যারা নগ্নতার সুখ সাগর।

আজও আমি মরে যাই সেই ঘৃণার ক্লান্ত অবসন্ন নির্জন রাতে।
------