শ্রাবণ বর্ষণ- রবীন্দ্র চরণ
কলমে- রমেন মজুমদার
তারিখ-৩১/০৭/২৪

আমারে দেখাও তবে কোথা সে আগুন!
পুড়ে পুড়ে খাক হোক যৌবন ফাগুন...
থাকিতে চাহেনা ঘরে-চৈত্রের খরায়...
বিষাদ নির্বাণে খাক!- সকলি পোড়ায়।

যত তাপ,তত সুখ!--তত তার ক্ষয়!
দল ছুট বিকেলের শেষের আলোয়;
স্নান সেরে নেই তবে,-ডুবের সাগর!
ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই কোথা সে বন্দর-?

তোমার ঋণের ঝুলি লয়েছি গলায়...
সঙ্গীহীন সামিয়ানা ব্যর্থ অন্তরায়..
ছাড়ি যদি দীর্ঘশ্বাস! হয়ে অর্ধ মরা !
একাকী মনের সন্ধ্যা গুনে যাই তারা।

যদি দেয় কৃপা আলো তারা বদ্ধদলে...
ছায়া লোক ছেড়ে আসি গগন ভুতলে..
তারপর ভাগীরথী--উপহার দলে ;
জননী গঙ্গার ধারা মুছে তার জলে।

পারিনি সাজাতে নাও,তোমা স্রোত জলে;
শ্রাবণের বারি ধারা-  সবকিছু ফেলে...
দিগন্ত চৌকাঠ খুলে- ফিরে আসি ঘরে
খুঁজি শুধু তোমা-ছায়া, নীরবে- নিথরে।

মুক্তির সলিলে ধুঁয়ে, ছুটি পথে পথে...
তবু কেন পড়ে থাকি মোহের দ্বৈরথে
গিয়াছে আষাঢ় ধারা মুক্তির আলোয়,
পায়ে পায়ে পথগুলি সব তার ক্ষয়।

অকস্মাৎ আমারে কে কানে কানে বলে,
মুক্তির আলেয়া সাধে শ্রাবণের জলে...
আঁধারের কিনারায় কান পেতে শুনি,
ঊষার দীপ্তির আলো যায় জাল বুনি।

আঙিনার কোলে গুহা শীতলের শয্যা!
দু'চোখ মুদিয়া আছি; আর নেই লজ্জা!
তুমি কোন লোকে থাক ?লয়ে জ্যো‌তি বরে,
দান দাও নত শিরে,--এই খেলা ঘরে।

মুক্তির সীমানা নিয়ে বসুধা তোমার
শ্রাবণ বর্ষণে ভরো --অন্ধ সরোবর!
রিক্ত যতো দিক আছে-সব শূন্যতায়
যাক পূর্ণ হয়ে আজ সকল আলোয়।

চিত্ত ধ্যান মগ্ন হতে খুঁজেছি তোমারে,
যদি পাই সেই জ্যো‌তি?- আঁধার পাথারে;
ধন্য দীনে লয়ে বক্ষে, মন্দিরে মন্দিরে-
পুজি নিত্য সঙ্গটুকু অমৃত শিখরে।

গগন বিদরী গর্জে মুক্তির মিছিল!
জলসিঁড়ি স্বর্গ হতে করিয়া পিচ্ছিল!
নামে সুখ সমাধিতে তুমি যেথা থাকো,
সেই নিশি ক্রান্তিকালে সবটুকু রাখো।

সোনালী কিরণ মাখা,মুক্তির সাধনা;
তব হাত স্পর্শে দাও শোধ করি দেনা
বিকেল শ্রাবণ ঘিরে আশিস বরণ -
রেখে দাও শিরে মোর তোমার চরণ।
-----