কি এক বর্ষা গেলো গত ভোরের পাতায় বৃষ্টি নামিয়ে,
যার মাঝে হাতছানি দিয়ে জোনাকিরা ছবি আঁকে বদ্ধ দেয়াল ভেঙে, টপটপ ফোঁটায় গল্প লেখে আর ভেজা শালের কান্না ঝড়ে পড়ে আমাদের শরীরে -
হিমালয়ের শেষ প্রান্তর হতে চাঁদের আলো আসে আর মেঘ ছুয়ে দিয়ে যায়,
তুমি আমি তখন কেবলি পাহাড় চূড়ায় গিয়ে দাঁড়ায় রঙধনু আঁকার তুলি নিয়ে;
কখনো চাঁদের ম্লান আলোয় নিরব শহরে যুদ্ধ নামার আগে
ঝর্ণার ধারার ন্যায় নেমে আসি কৃষ্ণাঙ্গদের শহরে,
কখনোবা নীল খামের আলপিন খুলে গুজে দিই তোমার
ঈশাণ কোণের চুলে।
রাতের আঁধারে তখন মানুষের অস্পষ্ট ব্যাস্ততা -
ল্যাম্পোস্টের স্নিগ্ধ আলোয়, বাস ট্রাক ট্রাম লাইনের ফুটপাতে জমে থাকা নির্জনতা কেবল পৃথিবীর ক্যানভাসে
চিত্রকারের মতো রঙ নিয়ে স্বপ্ন দেখে।
কিছুটা অগোছালো লেখার আড়ালে, আ’কার কিংবা ই’কারের অর্থ খুঁজে বেড়ানো পথিক;
কবি’র ডোবায় নতুন স্রোত খোঁজে।
চাঁদ এবং একটি গোলাপের লেখা উপন্যাসে যারা
তৈলাকার চরিত্রে অভিনয় করেছে,
কিংবা একটি কিশোর এবং জোৎস্নার আঁকা ছবিতে যারা
মৌমাছির মতো রঙ খুঁজে এনে দিয়েছে -
তাদের ইতিহাস এখনো বদ্ধ জাদুঘরের শেষ চৌকাঠের
কোণায় পড়ে থাকে রোদ শুকানোর আশায়;
অথবা কিছুক্ষণের জন্য পূর্ণাঙ্গ চাঁদের বৃষ্টিবিলাস দেখার
ইচ্ছায়।
পৃথিবী এখানে কৃষ্ণ গোলাপের মতো থমকে এসে পড়ে
থাকে, নির্জন চৌরাস্তার ফ্লাইওভারের নিচে মগ্ন শরীর
নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে -
কখনো রেলিং ধরে ছাদের একটি কোণায় পায়চারি করার
বেশে; দমকা হাওয়ায় নিজের মনে গল্প লিখে গান শুনায়
নিশি-পাখিদের।
পৃথিবী এখানে সাক্ষরতার কাগজে স্বপ্নের হিসেব লিখে
দিয়ে যায়,
স্পর্শ সুখের, সুরের মিছিলে কমলী ঢালের পাতায়
চড়ে দূর সাহারা মরুর দেশে গিয়ে হারায়।
এইতো! একটুখানি অন্যরকম এক ক্যানভাস।
যেখানে শিল্পী না, ছবি আঁকে পৃথিবী নিজের মতো করে,
নিজের রঙ নিয়ে।
যেখানে সত্য শীতল হিমালয়ী বাতাস নগর ভিজিয়ে দেয়;
তুমি আমি তখনো পাহাড় চূড়ায় রঙধনুর খোঁজে নিরব
দাঁড়িয়ে।