সে সময়ের কথা বলছি
যখন আমাদের লজ্জা ছিলো না;
ছেলে মেয়ে উভয় হাঁটুর উপরে প্যান্ট পরতাম।
সারা দিনের প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমকে
বিদায় জানানোর জন্য,অশনি সংকেত হিসেবে;
আকাশে পাখিদের মত ঝাকে ঝাকে মেঘ উড়তো।
চারিদিকে বাতাস বয়ে যেত
হঠাৎ হঠাৎ আমাদের ভাঙা চূড়া টিনের ঘরটা,
প্রচন্ড বাতাসে নড়ে চড়ে উঠতো।
মা আতঙ্কে মুখে কাপড়ের আঁচল গুজে দিতেন!
এই বুঝি মাথা গোঁজার সম্বলটুকু গেল।
আমি মোটেও ভয় পেতাম না!
শুধু সুযোগ খুজতাম কখন ঘর থেকে বের হবো,
বন্ধুদের সাথে এক হবো।
মাঝি যেমন নদী থেকে ছড়ানো ছিটানো জাল
খুব সর্তকতার সহিত টেনে টেনে তোলে;
পূবালী বাতাস ঠিক তেমন ভাবে,
আমাদের মাথার উপর দিয়ে খন্ড খন্ড মেঘ গুলোকে
টেনে টেনে নিয়ে যেত।
ঘাড় উচু করে উদাস চোখে তাকিয়ে তা দেখতাম!
কখনও কখনও দল বেধে নষ্ট গাড়ির টায়ার নিয়ে
মেঘেদের পিছু পিছু ছুটতাম।
হঠাৎ সবাই কে অবাক করে দিয়ে
আমাদের মাথায়,ঘাড়ে,পিঠে টুপ টাপ শব্দ করে
আকাশ থেকে ঝরে পড়তো কাঙ্খিত বর্ষা!
চিৎকার দিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠতাম সবাই।
বৃষ্টি ফোঁটার ছোঁয়ায় পুকুরের পানি গরম হয়ে যেত
কাদা মাটিতে মাখা মাখি হয়ে;
সবাই দলবদ্ধ হয়ে গাছে উঠে বৃষ্টির মত
টুপ টাপ করে,
পুকুরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়তাম।
বাজি ধরতাম,এক ডুবে কে কত দূর যেতে পারে।
গোপনে ডুব দিয়ে অন্য বন্ধুর পা ধরে টান দিয়ে
কুমির কুমির খেলতাম!
পানির নিচ থেকে বুদবুদ উঠিয়ে খই খই খেলতাম
রংধনুর মত রঙিন ছিলো মেঘলা সে দিন গুলা।
বৃষ্টির জল কেন কচু পাতায় জমে থাকে না
তা গবেষনার জন্য বিশেষজ্ঞ দল গঠন করতাম
সেই দলের ব্যর্থ দল নেতা ছিলাম;
এই আমি!
বাড়ি ফিরে এসে মায়ের হাতে মার খেতাম
ঠান্ডা লেগে যাবে,জ্বর হবে কেন বৃষ্টিতে ভেজলাম.?
গতকালও বৃষ্টিতে ভিজেছি;
মা আমায় একটুও মারে নি,একটা বকাও দেয় নি,
খোকা বড় হয়েছে...!!