তমিস্রা কাঁদিয়া কহিল মাতা,
তুমি ছাড়া এ জগত যে বৃথা।
ছেলে তব নাহি কর্ম জানে,  
প্রণয় হলো আজি যার সনে।
শ্বাশুড়ি শুনিয়া বধুর কথা,  
বলিল আহ্লাদে তাহা যথা।
নিজ হাতে করিব ধন দান,  
সুখে রহিবে দুই মহাপ্রাণ।
এ জগত ভরিবে তোমার ধনে,  
স্বামীসহ বাঁচিবে স্ব-সম্মানে।
শুনিয়া তমিস্রা শ্বাশুড়ির কথা,  
ক্ষেপণ না করিয়া সময় বৃথা।
লেখা পড়ায় দিলো যথা মন,  
বিদ্যোপার্জন পাহিল মনন।
স্বামী তাহার ব্যবসায় মত্ত,  
নতুন অতিথি হলো আগত।
পুত্র সন্তান পাইয়া তমিস্রাা,
শ্বাশুড়িকে করিল ভরষা।
পৈত্রিক বলে ঘটিল চাকরী,
দশ হলো পার সংসার তরী।
দিনে দিনে স্বামী তাহার,
ব্যবসা-বাণিজ্য করিল অসাড়।
বেকার নামে নব অবতার,
আসলো জীবনে তার।
অসাড় ভাবিয়া তমিস্রা,
বন্ধ করলো স্বামীর রাস্তা।
ভাবিয়া চিন্তিয়া গুরুজনে কয়,
স্ত্রীর বিদ্যা যদি বেশি হয়-
সংসার ভাঙিয়া খান খান হয়,
যদি স্ত্রী সৎ নাহি হয়।
এমনি ঘটিল তাহার,
তমিস্রার স্বামী বাহার।
না বুঝিয়া গতি,
হয়েছিল আদর্শ পতি।
জীবন করিয়া উজাড়,
স্ত্রীর বিদ্যা করিল সঞ্চার।
নব্য পরিচয়ে সে শ্রীমতী,
বাঁধিল প্রমাদ শীঘ্রগতি।
স্বামীর ধন করিয়া উজার,
নিজমতে গড়িল সংসার।
স্বামীকে করিয়া ভর্ৎসনা,
ডাকিয়া সকল গুরুজনা।
ভাঙিল এ সংসার,
দশ বৎসর হল অসার।
অবুঝ এ খেলা ঘর,
আপন যখন হয় পর।
বাঁচিতে চাহে কে সংসারে,
ভাঙে যবে তা বিনা ঝড়ে।
যাকে ভাসিয়াছে ভালো হৃদয় ভরে-
ভাঙিল বাহারের হৃদয় বিরহ পত্র পড়ে।
মায়ায় ভরা এ সংসার,
বিচিত্র রমণীর ভালোবাসা অসার।
যাকে বাসিয়া ভালো ধরে বুকে,
ডুবে আছিল সংসার  স্বপ্নলোকে।
বিদ্যার আলোতে আছে যে অন্ধকার
রাখিয়া মাথায় হাত বুঝিল বাহার।
যে হাতে গড়িয়া নারী,
নিয়ে এলো সামনের সারি।
সে-না তাকালো পিছনে ফিরি,
সংসার ভবলীলা সাঙ্গ করি।
যে গৌরবে গৌরবান্বিত
সে রহিল পাছে,
নতুন স্বপ্নে সে লালিত,
ধরিল না লাজে।
পাহিল সে নতুন স্বামী,
পাহিল নতুন সাজে।
স্ত্রীর বিদ্যা করিল স্ত্রী হারা,
বসিয়া ভাবে বাহার বেচারা।