কৃপা করো হে কৃপাময় এ ভব সংসার রণে
আমি ভীত শংকিত মনে ডাকি এ জীবনে।

অন্তর মম কলুষিত চঞ্চল সংসার বন্ধনে
আমি অনড়-অচল এ অনল পঙ্কিল জীবনে।

অশান্তির মাঝে খুঁজি শান্তির বারতা সর্বক্ষণে
সিন্ধু সেচে চাহি মুক্তা-অঢেল ধন চাহি ভূবনে।

আমি বাস্তুহারা-পথহারা বসেছি এক স্বপ্ন কাননে
তিমির আঁধারে ডুবিয়া-মরিয়া চলেছি শান্তির সন্ধানে।

আমি খুঁজিয়া চলিতেছি অনন্ত অনিলে শাণিত নয়নে
শান্তির স্মরণে-মননে মলিন বসনে চলেছি অম্ল কাননে।

যত পাহি তত চাহি- চাহিতে পাহিতে বিহ্বল মনে
আমি বঞ্চিত-সঞ্চিত ধনে মোহে মোহিত ক্ষয়িত ক্ষণে।

কূল-কলংকে আবৃত্ত লালিত-পালিত আপন জনে
আমি অসূর বলয়ে-আলয়ে রয়েছি মিলায়ে দ্বিজমনে।

পরনিন্দা-পরগুণের অতলে তলিয়ে উঠিতে চাহি গগনে
আমি মানব মনের মর্ম, মর্মর বচনে বিষিয়ে ছড়াই পবনে।

উঠিতে চাহি, পবনে ধরিয়া-গগনে ভাসিয়া সকল চূড়াপানে
আমি ভাবিতে পারিনা-বুঝিতে পারিনা আমিই-যে শূন্যস্থানে।

অবিনাশ করে নাশ-শাক্ত সনে-অনাসক্ত ছলি গোপনে
আমি নিজ নিবাসে-বিনাশে দিয়েছি নিশান ভজি কায়মনে।

কাল-মহাকাল, জাগতিক কায়া-মায়া বাধিঁছে মোহ পুষ্প কাননে
আমি ভুলিয়া-মিলিয়া চলেছি আঁধারে-অধরা অমৃত সন্ধানে।

মানব মঙ্গল মোড়ায়ে-মুছায়ে গড়েছি প্রাসাদ অপার সম্মানে
আমি যমালয়ে যামিনি জাগিয়া রয়েছি পুলকিত মনে।

আঁধারে বসিয়া আলোর উলম্ফন দেখিয়া বিভোর দু’নয়নে
আমি জানিনা-বুঝিনা জাগতিক খেলা সুরভিত সোপানে।

মিছে আশা মিছে পেশা-বসনে বাঁধিয়া বসেছি আসনে
আমি আমারে পিছনে বাঁধিয়া-সামনে চলেছি ছায়াসনে।

সূচাগ্র-সূচের ক্ষুরধার পথের আধার ভুলে চলেছি পথপানে
আমি বুভুক্ষু বশে ভুলে ডুবিতে চাহি শান্তির কুঞ্জে পরধনে।

হে প্রভু বন্ধ করে পঙ্কিল বাসনা ফিরায়ে আনো তব চরণে
বিলিয়ে দাও শান্তির বারতা সকল অশান্ত পাতক সনে।

হে কৃপাময়, তুমি রয়েছো সর্বস্থানে-
আমারে মিলায়ে-মিশায়ে দাও হে সকল সরল পুণ্য প্রাণে
ফিরায়ে দাও সকল মানবের সনে মহান বিশ্বের কল্যাণে।