ওগো বন্ধু !
আজো আমি বসিয়াছি, খুলিয়া প্রেমের প্রেমদানী
তুমি আজ বসিয়াছ, প্রেমের আকুল সাগরের ওপারে
আমি আজো বসিয়া বহু তলায়-
দেখিয়াছি তুমি বসিয়াছ মোর লাগি-
বিছায়ে তব আঁচলখানি।
ওগো বন্ধু !
পাওয়া না পাওয়ার বিরহে কাঁদিতেছ তুমি,
যে বিরহে কাঁদিতেছে প্রেমের সাগর-
যে বিরহে কাঁদিয়াছিল জনক নন্দিনী।
প্রতীক্ষায় প্রহর গুণেছো;
বিরহে বিসর্জন দিয়েছো কত অশ্রুসজল।
ওগো বন্ধু!
আমিও আজ দাঁড়িয়ে বাতায়ন পাশে
শুনিতে পাই তব বিরহের হাহাকার-
যা দিয়েছ পবনে লুটায়ে।
একটি স্বতন্ত্র বৃক্ষে ফুটেছিল দুইটি ফুল-তুমি আর আমি,
দু’জনাকে দু’দিকে ছড়ায়ে দিয়েছে আজি
জীবন তাণ্ডব লীলার প্রচণ্ড ঝড় কাল-বৈশাখী।
ওগো বন্ধু!
তবে কি তোমার আঁচলখানি বিছায়ে রেখেছো মোর লাগি-
উষ্ণ ললাটে চুম্বনের তেষ্টায় কখনো কি
কেঁপে উঠে তব দুটো ঠোঁট।
আজো কি দাঁড়িয়েছ নিয়ে রজনী গন্ধার বৃন্তখানি-
তোমার বিরহের সুবাস দিয়েছো কি বিলায়ে দবিাযামি।
অনন্তের অনন্ত বিরহ যে তোমায়
ওগো বন্ধু, বাঁধিয়া  না রাখিলেও
বিলিয়ে দিও না বৃথা গঞ্জনায়।
ওগো বন্ধু!
যে বিরহ সৃজিয়া আজি গড়িয়াছ অমরাবতী
দ্বীপ জ্বালিয়ে দিও তায়- তব বিরহ অনলে।
নিশিতে বাতায়ন খুলে যদি দেখিতে পাও-পূর্ণিমা রাতি
হাঁসিয়া না হলেও, কাঁদিয়া বলিবে না কভু
চাঁদিনীকে তব বিরহের নিয়তি।
ওগো বন্ধু!
কোকিল যখন গাহিবে গান
করিবে না অভিমান-
সান্ত্বনা না পেলেও করিও না তব বদন ম্লান
আঙিনায় ফুটন্ত ফুলের সুবাস করিবে যখন গ্রাস-
বিরহের বেদনায় দিও না কভু
নিষ্পাপ ফুলেরে অভিশাপ।