ভাষণ দিতে উঠে এক
               বিরাট মাপের নেতা
বলে গেল স্বক্ষমতার  
               গোপন গোপন কথা
গুপ্ত-গরম সুস্বাদু বিষ
                      অমৃত কবিতা
পেট ভরে পান করলো
                    এদেশের  জনতা।
      এখন—

মনে ধরে শ্রদ্ধা ভক্তি
শুনুন সেই নেতার উক্তি......

ক্ষমতা রে ক্ষমতা!
তোরে চাই, তোরে চাই
কী করে তোরে পাই
তোর প্রতি আমার আছে  মানুষ মারা মমতা।
ওরে  আমার ক্ষমতা!

আমি      তোর পিঠে চড়ে,
              আকাশ পাতাল ফুড়ে
              বেড়াই উড়ে উড়ে
ভুলে যাই মানুষের অধিকারের সমতা।
ওরে আমার ক্ষমতা!

ভুলে যাই  জাত
, ভুলে যাই দিন, ভুলে যাই  রাত
যেখানে সেখানে গিয়ে করি উৎপাত
ভোজবাজির খেলায় করি বাজিমাত
কারো মারি ইজ্জত , কারো মারি ভাত
প্রাণেও মেরে দিই কড়াৎ কড়াৎ।
আমি দশরথের পত্নী,
              শ্রী রামচন্দ্রের কঠিন বিমাতা!
আমি কৈকেয়ী-ক্ষমতা!  
ওরে আমার ক্ষমতা!  

হারায়ে যায় আমার হিতাহিত হুঁশ
চাকরি দিতে নিই লাখ লাখ ঘুষ
গিনিপিগ করে রাখি দেশের মানুষ

করি কত রকমের আরামের ধান্দা
তুলি প্রতিদিন কত হারামের চান্দা
কানে ঢোকেনা কোনো মানুষের নিন্দা

দেশের বাইরে পাঠাই দেশের টাকা
চুপা-চাপা মেরে চালাই দেশের চাকা
দশকে ঠকিয়ে হক  মারি একা
ভালো ভালো কাজে,
সুযোগ খুঁজে খুঁজে
আলোর মাঝে মাঝে
সৃষ্টি করি অন্ধকারে মনগড়া স্বার্থ ভরা
কালো কুটিল কুড়ুমবাজির প্রতিকূলতা।
ওরে— ক্ষমতা

নিত্যপন্যের গড়ি সিন্ডিকেট
কাটি জনগনের ক্ষুধার্ত পেট
ইচ্ছা মতো ভরি নিজের পকেট

আমি হয়েছি এক জমির দালাল
জোর জবরদস্তি করেছি হালাল
এলাকায় নাম আমার জালিম জালাল

ফুটপাতে গরিবের রক্ত চুষে
উঠেছি দিনে দিনে ফুলে ফুঁসে
কেউ কিছু কইলে উঠি রুষ

কাউন্টার চেনোস তোরা? কাউন্টার!
আরে বেটা! গাড়ি ছাড়ার সেন্টার এটা
                          গাড়ি ছাড়ার সেন্টার!
দেখোসনি!— এখানে যত গাড়ি আছে
                    সবাই লাইন মারে আমার পাছে
কোনো একটা গাড়ি!
আমার ঈশারা ছাড়া যাবেনা ছাড়ি
প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা উঠাই
কিছু টাকা দিয়ে কিছু বলদ পটাই
সন্ধ্যায় কিনে দেই মদের বোতল
এতেই ঠিক থাকে ক্ষমতার হাতল
মাঝে মাঝে করি  আমরা সে...ই  ফুর্তি
যাপন করি ক্ষমতার বছর পূর্তি
কাড়ি কাড়ি টাকা আর বাছা বাছা নারী
তার সাথে দেশ-বিদেশের  মদ মাদকের হাড়ি
ধরে রাখে ক্ষমতার পরিপূর্ণতা।
ওরে  ক্ষমতা!

বাপ- দাদার এই বেকুব দেশে
হক কথা কইলে মারি  কষে
ধর্ষণ করে দেই হেসে হেসে
স্বগৌরবে কবর দিচ্ছি সব মানবতা।
ওরে আমার ক্ষমতারে ক্ষমতা।

নর্দমা করেছি  আমি ভূমির অফিস
চাকুরে চামচারা খুবই খবিশ
শিরায় শিরায় চলে বিচিত্র বিষ
দেশ সেবার শপথ নিয়ে
ভণ্ড বিপথগামী হয়ে
করে চলেছি অবৈধ সব
         জঘন্য জুলুমি স্বার্থপরতা!
সব কিছুতে সেই  ক্ষমতা আর ক্ষমতা!

নদী ভেঙে ভেঙে উঠাই বালু
আমি হলাম সেই ঘাটের কালু
দলীয় নেতা আমার আপন খালু
কোনো কথা হবে না
কইলেই বানামু আলু ভর্তা, কচু ভর্তা
জানো নাতো আমার যে কী ক্ষমতা!!

অবশেষে হেসে হেসে

ক্ষমতার কবিতা শুনে কবি কয় হাচা
❝ক্ষমতার কিছুই তুমি পাওনিতো বাছা

বুঝলাম বেটা, তোমাদের ক্ষমতার নাই সীমা
তবু কিন্তু সুখী মানুষের গায়ে থাকে না জামা

শোনরে বেকুব কপট-দাপট, ক্ষমতার ক্ষ্যাপা
উপরওয়ালার আছে  কিন্তু সবকিছু মাপা।❞

এবার
কবির কথা শুনে, রক্তচক্ষে চেয়ে
ভীষণ রাগে কবির প্রতি নেতা এলো ধেয়ে
বললো, শালা পাগলা হইছে সকিনার ছ্যাক খেয়ে
পাতিরাও ধাওয়া দিল রামদা ছ্যান লয়ে
কবি এবার মানের ভয়ে –প্রাণের ভয়ে ভয়ে
নেতার দুইপা ধরে পড়লো সটান হয়ে শুয়ে
বললো, ❝ হুজুর সদয় হয়েন!
আমায় আপনি ক্ষমা করেন!
এ গোস্তাকি  মাফ  করেন!
আপনার নামে রচনা করবো
                       এমন গুণের নামতা
উপরওয়ালার উপরে  হুজুর,
                   থাকবে নেতার ক্ষ্যামতা!!❞

২৩/০৮/২০২৪
ভুলতা,রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।