এখন মাঝে মাঝে খুব নগ্ন মনে হয় সবকিছু
যখন স্বপ্ন দেখি, সবার মাঝে নিজেকে দেখি
না- আবিস্কার করি; আমার নগ্নতা।
যখন পথ চলি চোখে পড়ে
নগ্ন শিশু দাঁড়িয়ে কাঁদছে;
ক্ষুধায় কিংবা মাকে হারিয়ে
জানা হয়ে উঠেনা, দেখে যাই।
অফিস আদালতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিংবা যে কোন কর্মক্ষেত্রে সবার দৃষ্টিতে কেমন যেনো নির্লজ্জতা,
অফিসারদের উপড়ি বিহীন ফাইল স্বাক্ষর করার অনীহা,
কেরানীর চা পানের বায়নায় হাত পাতা
কিংবা ফাইল প্রসেসিং করতে.....
অথবা ট্রাফিক, সার্জেন্টদের চোখ লাল করে
কখনো লাঠি উচিয়ে গাড়ী চালকদের থেকে
টাকা নেয়াতে কি নির্লজ্জতা নেই?
পার্কে হাঁটতে গেলে চোখে পড়ে
অলোবাসার বহিঃপ্রকাশে প্রেমিক পুরুষ ভুলে যায় চক্ষুলজ্জা
বুকে জড়িয়ে কিংবা পিয়ার ঔষ্ঠাধর ছুঁয়ে
লুটে নেয় উষ্ণতা!
হায় কি নির্লজ্জতা।
সন্ধ্যে নামার পরপরই পার্কের অন্ধকারে
ভাসমান পতিতাদের রাতভর চলে দেহদান;
তখন সেখানে থাকেনা আইন; থাকে কেবল মূক জনতা
আধো আলো অন্ধকারে বিষ্ফারিত চোখে দেখে যায়
বিনে পয়সার ঐ নগ্ন বাস্তবতা।
মাঝে মাঝে চিৎকার শোনা যায় নারী কণ্ঠের
"খারায়া দেখস কি? কাম করবি তো আয়"
কোবল শুনে যাই, প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের
ভাষা খুঁজে পাই না-অথবা জানা থাকে না।
প্রধান সড়কে মোটর যানগুলো ছুটে যায় ইচ্ছেমতো
না থাকে আইন মানার ইচ্ছা, না থাকে
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ!
দীর্ঘশ্বাস ঠিকরে বেরোয় বুকের গহীন থকে।
পত্রিকার প্রথম পাতায় বিশাল কভারেজে ছাপা হয়
কিশোরদের হেরোইন গ্রহণের দৃশ্য, বিভৎস লাশের ছবি
কিংবা রোমহর্ষক ধর্ষনের বিভৎস সংবাদ।
সাড়া পড়ে যায় সমালোচকদের চায়ের আসরে
গর্ব বুকে নিয়ে ফটোগ্রাফার-রিপোর্টার
নতুন খবর বা ছবি ছাঁপিয়েই যান।
ততটুকুই... চায়ের কাপে চা যতক্ষণ উত্তপ্ত থাকে
আলোচনা বা সমালোচনাও থাকে উত্তপ্ত
নেই প্রতিকার- নেই সমাধান।
থাকবে কেমন করে, যদি রক্ষকই হয় ভক্ষক
অর্থ্যাৎ নেশা দ্রব্য বিক্রতার মুখে শোনা যায়
"শালা পুলিশ ট্যাকা ও নেবো আবার ফাপড় ও দিবো"!!!
আসলে মনে হয় আমাদের সমাজটাই নগ্ন হয়ে গেছে
নাকি নগ্ন হয়ে গেছে আমার এ দুটি চোখ
আমার মন, যা এত নগ্নতা দেখে।
হয়তো তাই, নইলে স্বপ্নে কেনো দেখবো সবার মাঝে
উলঙ্গ আমি হেঁটে যাচ্ছি, কাজ করছি, কথা বলছি-
নগ্নতা আমায় বারবার জাগিয়ে দেয়
তাই এই রাতজাগা-কিন্তু
কতোদিন এভাবে জেগে থেকে , ঘুমের মাঝে
দেখে যেতে হবে আমার, মানুষের
এই নির্লজ্জতা আর নগ্নতা???