হে বাংলাদেশের বীর সাহসী জনতা,
হে নারী, হে পুরুষ, হে আবালবৃদ্ধবণিতা,
জাগো, জাগো রে আমার বাংলাদেশের সব সন্তান।

হে আলোর দিশারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষক,
হে তাঁতি, জেলে, বণিক, শ্রমিক ও কৃষক,
দেশের তরে জাগো রে তোমরা জান করে কোরবান।

অস্ট্রিক, নিষাদ, আর্য, আরব, মঙ্গলে
পুণ্ড্র, সমতট, বঙ্গ, গৌড়, হরিকেলে,
পাল, সেন, চন্দ্র আর কৈবর্ত সন্তানে,
বারভুঁইয়া আর বাঙ্গালার সুলতানে_
মিলেঝিলে আমরা সকলের মিশেলে একপ্রাণ।  

আজাদীর তাগিদে বাঙালি মুসলমান,
জোর লড়াই করে আনল পাকিস্তান,
মুক্তির স্বপ্নভঙ্গে মুক্তিপাগল জাতি,
একাত্তরে অকাতরে করে আত্মহুতি,
গড়ল বাংলাদেশ, এক আকাশ স্বপ্নের সমান।

আত্মমর্যাদাশীল বীর জাতি বাংলাদেশি,
রক্ত দিয়ে রোধে স্বৈরশাসক-আগ্রাসী।
দেশের মালিক জনতা, তারাই প্রাণশক্তি,
তাঁদের রক্তে চব্বিশে এলো পুনর্মুক্তি;
জান কোরবান বাংলাদেশকে করে নতুন প্রাণ দান।

হে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ আর খ্রিস্টান,
হে বাঙালি-গারো-খাসিয়া-চাকমার সন্তান,
একজন না বাঁচলে বাঁচবে না যে অন্যের প্রাণ
বিবেক-বিচক্ষণতায় হও বলীয়ান্‌,
সকল বিভেদের ঊর্ধ্বে রাখো বাংলাদেশের স্থান।

হে সকল দলের বাংলাদেশি সন্তান,
হে সকল ধর্মের বাংলাদেশি সন্তান,
হে সকল জাতির বাংলাদেশি সন্তান,
বাঁচাতে চাইলে নিজের জান ও মান,
পরস্পর ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঁচাও সবার প্রাণ।

সাহিত্যশৈলী: কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। কবিতাটিতে মোট ৭টি পর্ব রয়েছে, যার মধ্যে প্রথম দু’টি পর্ব ১৪+১৪+১৮ আকারের এবং বাকি ৫টি পর্ব ১৪+১৪+১৪+১৪+১৮ আকারের। অর্থাৎ প্রতিটি পর্বের সাধারণ ছন্দগুলো ১৪ মাত্রার এবং পুনরাবৃত্তিমূলক ছন্দগুলো ১৮ মাত্রার।