বিশ্বে আমি এক মুক্ত মানবসন্তান,
যতদিন আছে দেহে প্রাণ, গেয়ে যাই গান,
মুক্তির জয়গান, অধিকারের জয়গান।
মুক্ত বিশ্বে এসেছি তো মুক্তই সবাই,
মুক্তভাবে বাঁচতে তাই স্বাধীনতা চাই,
আর অধিকার চাই সবার জন্য সমান।

একেক ব্যক্তি আমরা একেক তো স্বার্থ,
একেক জীবনের একেক মত, পথ, অর্থ;
সবার স্বার্থের সম-সুরক্ষায় চলো,
একটি উদার সুষম ব্যবস্থা গড়ে তোলো,
যেথা সকলের সম-সুরক্ষা ও সম্মান।

করতে সকলের সম-মুক্তির আবাদ,
জন লক গড়লো মতবাদ: উদারতাবাদ;
গণতন্ত্র, গণমুক্তি, গণ-অধিকার,
মুক্তচিন্তা, মুক্তমত, মুক্তবাজার,
আর মুক্তমিডিয়া প্রতিষ্ঠার আহ্বান।

উদারতাবাদ চায় সকলের সহযোগিতায়,
সকলের তরে এ উদার মুক্ত বসুধায়
উদার সমাজ, উদার রাষ্ট্র ও বিশ্ব,
যেখানে কেউ নয় রাজা, কেউ নয় নিঃস্ব,
কারো থেকে কারো নয় বেশি কিংবা কম মান।

ইউরোপে, আমেরিকায় ও অন্য দুনিয়ায়,
রাজনীতির ভিন্ন ভিন্ন বাস্তবতায়
নানা প্রশাখায় উদারতাবাদে বিভক্তি;
তবে, সব শাখার মূলসুর: মানবমুক্তি,
ব্যক্তি-অধিকার আর জনতার কল্যাণ।

“সকলের উদারতায় সকলের মুক্তি”_
এই মন্ত্র দেয় গণজাগরণের শক্তি;
ইংল্যান্ডের সেই গৌরবময় বিপ্লব,
মার্কিন স্বাধীকার ও ফরাসি বিপ্লব,
এইসব বিপ্লব উদারতাবাদের দান।

“জন্মকালে কোনো মানুষ থাকে না কারো দাস।”
এই চিন্তা জন্ম দেয়Ñ মুক্তির অভিলাস।
এই অভিলাশ জন্ম দেয় আরেক মতবাদ_
চিরমুক্তির মুক্তির দর্শন: স্বাধীনতাবাদ_
বাম-ডান সকলকে করে নতুন চোখ দান।

মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা বাড়াতে,
বহু বৈশ্বিক চেষ্টার নানান পরতে
স্বাধীনতাবাদ আর উদারতাবাদ মিলে
গড়ে তোলে এক বিরাট বিপ্লব তিলে তিলে,
যা মানবজাতিকে আজ যোগায় পরিত্রাণ।

এসব চিন্তায় জাগা মুক্তির চেতনায়
ব্রিটিশ বাংলায় বিপ্লব প্রাণ পায়,
আজাদির আকাক্সক্ষায় আসে পাকিস্তান,
অধিকার না মেলায় বাঙালি করে অভিযান,
আরো করছে অভিযান, মুক্তির অভিযান।

রচনাকাল: ১৬ জুলাই ২০২৪
সাহিত্যশৈলী: এটি একটি শিক্ষামূলক লিমেরিক ধরণের কবিতা (Didactic Limerick)। কবিতাটির ৭টি স্তবকের মধ্যে প্রথম স্তবকটি ৩ পঙক্তি-বিশিষ্ট ২টি ত্রিপদী ছড়ার দ্বারা গঠিত এবং অবশিষ্ট ৬টি স্তবক পঞ্চপদী কুইন্টেন (pentastich quintain), দ্বারা গঠিত। কবিতাটির প্রতিটি পঙক্তি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে ১৭ মাত্রার।