আজাদি, আজাদি করে, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা করে,
বহু বার আমরা মরে ও মেরে,
বহুবারই আমরা হারিয়েছি আজাদি আর স্বাধীনতা,
এইবার আমরা আর হারাতে চাই না তা।
গণআন্দোলন গণআন্দোলন করে, গণঅভ্যুত্থান গণঅভ্যুত্থান করে,
বহু বার আমরা মরে ও মেরে,
বহুবারই আমরা হারিয়েছি জনগণের অধিকার,
এইবার আমরা সেইসব অধিকার হারাতে চাই না আর।
গণআজাদি আর গণঅধিকার হারিয়েছি বারবার
যখনই এসেছে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরাচার।
যেসব শোষক-নিপীড়ক-স্বৈরাচার,
আমাদের তাড়া খেয়ে হয়েছে পগারপার,
তারা কিন্তু কখনো ফিরে আসেনি আর!
তবু একই কায়দায় একই সিস্টেম এসেছে কেন বারবার?
ভেবেছো, কখনও কি একবার?
পালিয়ে যাওয়া নিপীড়ককে গালি দিয়ে,
আমাদের সংগ্রামের সঙ্গীরাই কিন্তু ফিরে এসেছে নতুন নিপীড়ক হয়ে।
পালিয়ে যাওয়া শোষককে গালি দিয়ে,
আমাদের সংগ্রামের সঙ্গীরাই কিন্তু ফিরে এসেছে নতুন শোষক হয়ে।
পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারকে গালি দিয়ে,
আমাদের সংগ্রামের সঙ্গীরাই কিন্তু ফিরে এসেছে নতুন স্বৈরাচার হয়ে।
পালিয়ে যাওয়া ব্রিটিশ উপনিবেশিকে গালি দিয়ে,
আমাদের মুসলিম লীগের মুজাহিদেরাই কিন্তু ফিরে এসেছে পাকিস্তানি উপনিবেশ হয়ে।
পরাস্ত হওয়া পাকিস্তানি বৈষম্যকে গালি দিয়ে,
মুক্তিযুদ্ধের মহানায়কদের অনেকেই কিন্তু এসেছে নতুন বৈষম্য নিয়ে।
স্বৈরাচারী এরশাদ ও বৈষম্যবাদী পাকিস্তানকে গালি দিয়ে,
শেখ হাসিনা দেশ গড়েছিল ফ্যাসিবাদী বৈষম্য ও স্বৈরাচারী উপাদান মিশিয়ে।
অতীতের সব বৈষম্যকারী, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী, শোষক ও নিপীড়ককে নিন্দিয়ে
আমরা যদি একই জিনিস আনি ওদের কায়দা-কানুন সব মিশিয়ে,
এতো শহিদের রক্তদানের মূল্য জাতি চুকাবে কী দিয়ে?
আবারো যদি জাতি বিভক্ত হয় কিংবা আঘাত পায়, এই জাতি টিকে থাকবে কী নিয়ে?
এইবার তাই, চলো যাই যুদ্ধে_
আমাদের বিরুদ্ধে।
চলো যাই যুদ্ধে_
আমাদের লোভের বিরুদ্ধে।
চলো যাই যুদ্ধে_
আমাদের মধ্যে লালিত থাকা স্বৈরাচারী প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে।
চলো যাই যুদ্ধে_
আমাদের মধ্যে লালিত হওয়া ফ্যাসিবাদের দালালির বিরুদ্ধে।
চলো যাই যুদ্ধে_
আমাদের মধ্যে লালিত হওয়া ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্যসমূহের বিরুদ্ধেÑ
ট্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে,
গ্রুপিংয়ের বিরুদ্ধে,
চুরি-বাটপারির বিরুদ্ধে,
অবৈধ সুবিধা নেওয়ার ইচ্ছার বিরুদ্ধে,
অন্ধভাবে কাউকে সমর্থনের বিরুদ্ধে,
অন্ধভাবে কাউকে নিন্দামন্দের বিরুদ্ধে,
যাচাই না করে মিথ্যা গুজব ও প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর বিরুদ্ধে,
কাউকে সমালোচনা-অযোগ্য কাল্ট ভাবার বিরুদ্ধে,
বিনা প্রশ্নে কোনো কিছু মেনে নেওয়ার বিরুদ্ধে,
অশিক্ষা, মুর্খতা ও যুক্তিহীনতার বিরুদ্ধে,
আমাদের বিবেকে ‘যা কিছু অন্যায়’ মনে হয়, তার সবকিছু নিজে করার বিরুদ্ধে।
এই যুদ্ধে যদি জয় পাই,
তাইলেই আর নতুন করে কোনো স্বাধীনতা-যুদ্ধের দরকার নাই,
প্রশ্ন করো নিজেকে-
এই যুদ্ধের চেয়ে বড় যুদ্ধ কি আর পড়ে তোমার চোখে?
সাহিত্যশৈলী: আমার ছোট-বড় নানা ধরণের অপরাধে লিপ্ত হই। অনেক সময় ছোট অপরাধকে আমরা গুরুত্ব দেই না। এতে করে আমাদের মধ্যে পাপ করার অভ্যেস তৈরি হয়ে যায়। ছোট-বড়-মাঝারি সব ধরণের পাপ হতে নিজেদেরকে নিবৃত করতে স্বল্প-মেয়াদী, মধ্য-মেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি সব রকমের উদ্যোগ উদ্যোগ নেওয়া দরকার। আমাদের নিজেদের রিপুর বিরুদ্ধে বৈচিত্র্যময় প্রকারের জিহাদ করার প্রয়োজনীয়তাকে রূপকাকারে তুলে ধরার প্রয়াসে মুক্তক ছন্দে রচিত এই কবিতাটিতে বিভিন্ন মাত্রার পঙক্তি দ্বারা বিভিন্ন আকারের পর্ব গঠন করা হয়েছে।