দেহের ভেতর যদি কোনো কোষ বেয়াড়াভাবে বাড়ে,
আর অন্যকোষের জীবন বিপন্ন করে,
তবে সেই বেয়াড়া কোষগুলোকে আমরা ‘ক্যান্সার’ বলি।

ক্যান্সার কোষকে যদি আমরা অঙ্কুরেই না মেরে ফেলি,
পুরো দেহটাই মরে যায়,
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে।

দেহের কোনো অঙ্গে যদি অসুখ করে,
আর আমরা যদি তা সাড়িয়ে তোলার চেষ্টা না করে,
পুরো অঙ্গটাই কেটে ফেলি,
তাইলে তো একেক করে সমস্ত দেহটাই
টুকরো টুকরো হয়ে শেষ হয়ে যায়।

দেশের কোনো দল, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়,
যদি বড় কোনো দোষ করে,
দেশের অস্তিস্তকে আঘাত করে,
কিংবা দেশে সংহতিকে নষ্ট করে,
অতপর,
নিজের ভুল বুঝতে পেরে সুপথে ফিরে আসতে চায়,
অনুতপ্ত হয়ে ভালো হয়ে যেতে চায়,
তাদেরকে যদি সেই সুযোগই দেওয়া না হয়,
তবে তারা তো আরো বিক্ষুব্ধ হয়
অস্থিরতা সৃষ্টি করে দেহাভন্ত্যরে অ্যান্টিজেনের মতো,
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দেহাভ্যন্তরে ক্যান্সারের মতো।

যদি কোনো গোষ্ঠী দোষ করে তা স্বীকারই না করে,
আত্মসংশোধনের কোনো চেষ্টাই না করে,
অনুতপ্ত হওয়ার সম্ভাবনাই যদি না থাকে তার,
তবে তো সেই গোষ্ঠী ‘রাষ্ট্রের প্রকাশ্য ক্যান্সার’।

ক্যান্সার কখনো কল্যাণ আনে না কারো।
দেহে, পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে কিংবা অন্য যেকোনো সিস্টেমে
যদি ক্যান্সার বাড়ে,
তা সেই সিস্টেমকে আগে মারে,
অতপর মৃত্যু হয় ক্যান্সারেরও।

ক্যান্সারের চিকিৎসা হলে রোগী সুস্থ হয়,
চিকিৎসা না হলে রোগী মারা যায়,
অতপর মারা যায় ক্যান্সার কোষগুলোও।

আত্মসংশোধনে অনিচ্ছুক কোনো অপরাধী গোষ্ঠীর চিকিৎসা না হলে,
তার বাড় বাড়ে ক্যান্সারের মতন,
যার ফলে ধ্বংস হয় দেশ-জাতি-রাষ্ট্র,
তার ফলে রাষ্ট্রহীন অপরাধী মারা পরে,
ক্যান্সারে মৃত রোগীর দেহাভ্যন্তরের কোষগুলোর মতন।

কালে কালে প্রতিটি দেশে
অ্যান্টিজেনের মতন আঘাত করে বহিঃস্থ শত্রু
আর ক্যান্সারের মতন স্ব-দেশিকে আঘাত করে দেশীয় গাদ্দার।

মাথায় ক্যান্সার হলে পুরো মাথা কেটে ফেলাটা কি সমাধান?
কোন গোষ্ঠীতে ক্যান্সারের মতন জনবিরোধী উপাদান সৃষ্টি হলে পুরো গোষ্ঠীকে মেরে ফেলা কি সমাধান?
কোনো দল বা গোষ্ঠীর মানুষ জনগণকে নিপীড়ন করলে তাদেরকেও কি অনুরূপ নিপীড়ন করাটা সমাধান?

দেহাভ্যন্তরে কোনো অঙ্গে ক্যান্সারের সমাধান হলো_
সুচিকিৎসার মাধ্যমে অঙ্গটি সাড়িয়ে তোলা,
আর আক্রমণকারী কোষকে সড়িয়ে ফেলা।

দেশাভ্যন্তরে কোনো গোষ্ঠী-দলে ক্যান্সারের সমাধান হলো_
দোষীদের বিচার করে নির্দোষকে বাঁচিয়ে রেখে পুরো গোষ্ঠীকে সাড়িয়ে তোলা,
সংশোধনে যে সাড়বে তাকে আত্মসংশোধনের সুযোগ দেওয়া,
যে শোধিত হতে চায় না, তাকে গারদে দেওয়া।

গোষ্ঠী-দলে ক্যান্সারের সমাধান হলো_
আত্মসংশোধনের পথে গিয়ে সেড়ে ওঠার চেষ্টা করা,
ভুলে মাশুল হজম করা,
আর ভুল না করার জন্য তওবা করা,
ও সংযম করা।

যারা পরাজিত হয়,
শুধু তাদেরই যে শোধন দরকার হয়, তা নয়।
পরাজিত পক্ষের কেউ যদি অপরাধী না হয়,
তবে তাকে নিপীড়ন করাটাও ক্যান্সারি কারবার।
বিজিত পক্ষেও যদি কোনো অপরাধী রয়
তবে সেও সাক্ষাৎ ক্যান্সার।