জন্মের ক্ষণটা ভুলে গেছি
শুনেছি সুর্য মামা তখন মধ্য আকাশে
আমি কাঁদতে ভুলিনি , তবে সে কান্না জলহীন
জলের তো অনেক মূল্য, তাই
তবে অনেক কিছুই ভুলে গেছি অবলীলায়।
শৈশবে আমি হাসতে ভুলিনি
তবে এখন সে হাসির মূল্য অনেক
আমি মূল্যহীন, আমার কাছে তো কোন মূল্য নেই
কারো কাছে মূল্য আছে; মূল্য ?
আমার কিছু মূল্য দরকার , মূল্য কি বিক্রি হয়?
ছেলেবেলায় বামুন ঠাকুর বলেছিলো,
‘এখন ঘুমিয়ে যাও’, বিকালে বৈকুন্ঠর মেলায় নিয়ে যাব
ওখানে পয়সা হলে সব মেলে।
আচ্ছা ওখানে কি পয়সা হলে মূল্য দেয় ?
আমি বামুন ঠাকুরকে জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি,
আমার কাছে তো পয়সাও নেই
তাহলে মূল্য কোথায় পাই?
মূল্য কি বাকিতে মেলে, নাকি অনেক দামি।
মা বলেছিলেন, ’’স্কুলে গিয়ে মারামারি করবে না
তাহলে তোমাকে নরকোলের নাড়ু গড়িয়ে দেবো’’,
মা নাড়ু গড়িয়ে দিতে ভুলে যাননি, কিন্তু -
আমি আজ্ঞা ভুলেছি প্রতি ক্ষণে।
আজ মা আর আজ্ঞা দেন না, মার জন্য অনেক কষ্ট হয়
আর শুনেছি কষ্টের নাকি অনেক মূল্য ;
আমার কাছে তো মূল্য নেই, তবুও কষ্ট পাই
এ কষ্টবুঝি কখনো কখনো ভুলে বিনা পয়সায় পাওয়া যায়।
এরপর ভুলতে ভুলতে ৭০ এর পড়ন্ত বেলায়
অচল মূল্যহীন বোঝাসম।
অবনীতা বলেছিলো ,তুমি আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান –বুঝলে?
হাসির মূল্য জেনেও সেদিন একটু হেসেছিলাম
কারন তখন আমার কাছে একটু মূল্য ছিলো
যা অবনী আমায় স্নেহভরে দিয়েছিলো।
যেদিন ও আমার কোলে মাথা রেখে বলেছিলো; আসি,
জলের মূল্য জেনেও আমি কেঁদেছিলাম
কারন তখন আমার কাছে একটু মূল্য ছিলো
আপনজনই তো মূল্যদেয় , মূল্য বোঝে।
ঝাপসা দৃষ্টি আর স্বৃতি হাতড়ে, অবনীকেও আজ ঝাপসা মনে হয়
কিন্তু যার চিরোচেনা মুখে এতোকাল নিজের ছবি এঁকেছি
মহাকাল তাকেও আজ ঝাপসা মূল্যহীন করে দিলো ?
আমি ভুলে যাই অবলীলায়, মহাকাল মনে রাখে।।