ইংরেজি Trochaic ছন্দের অনুসরণে শ্রীযুক্ত সত্যেন্দনাথ দত্ত (১৮৮২-১৯২২) সফল কবিতা রচনা করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। প্রতিটি পর্বে দুটি করে রুদ্ধ সিলেবল দিয়ে তিনি এ ছন্দে কাব্য নির্মাণ করেন। তাঁর প্রায়োগিক কলায় মাত্রাবৃত্ত ছন্দের বিশেষ প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। তাঁর এ প্রয়োগ স্বরমাত্রিক ছন্দেও সিদ্ধ। তাঁর এমনই এক কবিতার অংশবিশেষ –
“তুল তুল টুক টুক
টুক টুক তুল তুল
তার তুল কার মুখ?
তার তুল কোন ফুল? "
এখানে একটি বিশেষ শব্দালঙ্কারের প্রয়োগ ও ঘটে। এটি ধ্বনুক্তি শব্দালঙ্কার। বর্ণ, শব্দ বা বাক্যের ধ্বনিরূপের সাহয্যে অর্থ আভাসিত হলে যে চমৎকার ব্যঞ্জনার সৃষ্টি হয় তাকেই ধ্বনুক্তি বা ধ্বনিবৃত্তি অলংকার বলে। এখানে লক্ষ্যযোগ্য বিষয় হলো, ধ্বনির দ্বারা অর্থের আভাস পাওয়া গেলেও অর্থগত দিকটা মূখ্য নয়। এখানে ধ্বনির মাধুর্য ও সৌন্দর্যটাই আসল ব্যাপার।
এ ধারার রচনা বাংলা সাহিত্যে খুব বেশি নজরে আসেনি। এ বিষয়ে এ প্রতিবেদকের জ্ঞান খুবই নগণ্য। তথাপি কিছুদিন পূর্বে একটা প্রয়াশ ছিল। আজই আসরের পাতায় কবিতাটি প্রকাশ করেছি। কবিতাটির কিয়দাংশ নিম্নরূপ:
“টানটান তাঁর চোখ তাঁর চোখ টানটান
আনচান মনখান মনখান আনচান।
মন গায় কোন গান কোন গান মন গায়
বন-গাঁয় শন শন শন শন বন-গাঁয়!”
ভাবলাম বিষয়টি বন্ধুদের সাথে একটু আলোচনা করি। এতে হয়তো এ বিষয়ে অধীক জানা যাবে। মেধাবী কবিগণের দ্বারা কিছু স্বার্থক কবিতাও রচিত হতে পারে। হতে পারে ভারি ভারি অর্থের বাইরে গিয়েও মহৎ কিছু সৃষ্টি –যা পাঠকের কানকে তৃপ্ত করবে। তাই বিষয়টি আলোচনার পাতায় নিয়ে আসা।
ভাল লাগলে ধন্য হবো।
তথ্যসূত্ : ছন্দ ও অলংকার।