যতবার আমি আকাশের দিকে চেয়ে থাকি, ততবার মনে হয়, তুমি ছিলে এক অদৃশ্য মহাকাব্য, যার প্রতিটি শব্দ আজও আমার মনের গহীনে প্রতিধ্বনিত হয়। সে প্রেম ছিল এক অন্তর্গত সংঘর্ষ, যেখানে অনুভূতির সাগর এক অজানা স্রোতে প্রবাহিত হত, আর আমি সে স্রোতের মাঝে হারিয়ে যেতাম। তোমার চোখে ছিল এক রহস্যময় গভীরতা, যেন এক বিমূর্ত জ্যোতি, যা অবচেতনের পর্দায় সঞ্চালিত হয়ে, আমাকে এক নতুন আলোর পথে নিয়ে যেত।
তুমি ছিলে এক সৃষ্টির আর্কিটেকচার, যার মধ্যে অপার সম্ভাবনার নির্মাণ ছিল। তোমার শব্দগুলো ছিল এক অমূল্য রত্ন, যেগুলো আমাকে অজ্ঞেয় উপলব্ধির দিকে নিয়ে যেত। তোমার মুখের প্রতিটি বাক্য ছিল এক বিভ্রান্তি, যেখানে সময়ের প্রতিটি দানা এক অমোঘ প্রভাব সৃষ্টি করত। কিন্তু তুমি চলে গিয়েছিলে—যেমন বাতাসের হাওয়া এক মুহূর্তে ধ্বংসের আগুনে পরিণত হয়। তবুও, তোমার স্মৃতি—এক নীরব, অমর দ্যোতনা—আজও আমার হৃদয়ে বিঁধে আছে।
আজও মনে হয়, তুমি ছিলে এক অনন্ত রহস্যময় কোণ, যেখান থেকে জীবনের সমস্ত দৃশ্য এক নতুন রূপ ধারণ করেছিল। তোমার সঙ্গে ছিল এক অভ্যন্তরীণ ঝড়, যা কখনও প্রশমিত হত না, অথচ চিরকাল আমার অস্তিত্বের গভীরে শূন্যতা সৃষ্টি করেছিল। তুমি ছিলে এক গোপন যন্ত্রণা, যার গভীরে এক অপূর্ব প্রশান্তির সন্ধান ছিল, তবে সে প্রশান্তি ছিল অনুপস্থিত, শূন্যতায় নিমজ্জিত।
যতবার আমি নিজের দিকে তাকাই, ততবার মনে হয়, তোমার প্রতিটি ছায়া আমার মধ্যে প্রবাহিত হচ্ছে, যেন তা এক গভীর অস্পষ্ট দ্যোতনায় রূপান্তরিত হয়। আজও, যখন আমি রাতের নিস্তব্ধতায় হারিয়ে যাই, তোমার হাসির প্রতিধ্বনি আমার মনের গভীরে গুঞ্জিত হয়। সে হাসি ছিল এক সান্নিধ্যহীন সুর, যার প্রতিটি ধ্বনি আমাকে এক অজানা সম্ভাবনার পথে চালিত করত।
কিন্তু আজ জানি, তুমি আর নেই, তবুও তোমার স্মৃতির স্রোত আমার অন্তরে এক অন্তর্গত আলো হয়ে রয়ে গেছে, যা কখনো নিভে না। তোমার যাত্রা আমাকে এক অনন্ত শূন্যতার মধ্যে শিখিয়ে গেছে, যেখানে অবিরাম প্রতিসরণ আমাকে চিরকাল তোমার দিকে টানে। তোমার চলে যাওয়া, তোমার অবসান—আজও আমাকে এক নতুন আশার আলোর দিকে ঠেলে দেয়, যেখান থেকে আমি প্রতিটি মুহূর্তে তোমার প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাই।