আমি রাকিবুল, চর জাঙ্গালিয়ার ছেলে।
এই মাটির গন্ধ, মেঘনার স্রোত,
আমার শিরায় শিরায় প্রবাহিত।
জন্মেছি এই নদীর কোলে,
মেঘনার জলে দেখেছি আকাশের প্রতিচ্ছবি।

হাজিরহাট বাজার,
সুলতানিয় রোড আর আমজাদিয়া পথ—
এগুলোই আমার জীবনগাথার প্রথম অধ্যায়।

আমি শিখেছি মানুষকে ভালোবাসতে,
এই গ্রামের সরল হাসি,
কৃষকের ক্লান্ত মুখ,
মাটির গন্ধমাখা দুপুরবেলা—
সবই আমার গল্প।
যেখানে মেঘনা নদীর ঢেউ বলে—
জীবন থেমে থাকে না,
চলতে হয়, স্বপ্ন দেখতে হয়।

আমার শৈশবের সকাল শুরু হত
পাখির কলরবে।
পাঁচ মসজিদের আজান মিশে যেত
আমার নির্জন দুপুরে।
গাঁয়ের পথ, খালের পাড়,
আমার ছোট্ট পা দিয়ে মাপা।
বড় হওয়ার স্বপ্নে ভরা সেই দিনগুলো,
যেন আজও আমার কলমের কালিতে বাঁচে।

আমি কলম ধরেছি জীবনকে আঁকতে।
আমার শব্দে মিশে থাকে গ্রামের গল্প,
মাটির কথা, মানুষের ব্যথা।
আমি লিখি চর জাঙ্গালিয়ার রোদ-জলের কাহিনি,
যেখানে মানুষ বেঁচে থাকে মেঘনার ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে।
আমি লিখি সেই কৃষকের কথা,
যার ঘামে ভেজে উঠেছিল আমাদের উঠোন।

আমার পথচলা কখনো সমতল ছিল না।
কখনো ঝড়, কখনো বৃষ্টি,
জীবনের পথে ছিল অনেক বাধা।
তবু আমি হেঁটেছি,
হাঁটছি এখনো, কারণ আমি জানি—
আমার কলম থামলে গল্পও থেমে যাবে।

হাজিরহাট বাজারের কোলাহলে
আমি খুঁজে পাই জীবনের ছন্দ।
সুলতানিয় রোডের সমতল মাটির ধুলো
আমার পায়ে লেগে থাকে এখনো।
আমার গল্পের প্রতিটি চরিত্র,
আমার চারপাশের মানুষ।

মেঘনার ঢেউ আমাকে ডাকে—
"তুমি থেমে যেও না, রাকিবুল।
তোমার কলমের আঁচড়ে জীবনকে গেঁথে যাও।
তুমি লিখে যাও কমলনগরের আকাশ,
চর জাঙ্গালিয়ার মাটি,
হাজিরহাটের স্বপ্ন।"

আমি রাকিবুল।
আমি লিখি জীবন,
লিখি মানুষের গল্প,
লিখি চর জাঙ্গালিয়ার ইতিহাস।
আমি চাই, আমার শব্দ
তোমার হৃদয়ে পৌঁছে যাক।
তুমি অনুভব করো
মেঘনার ঢেউ,
হাজিরহাটের ভোর,
সুলতানিয় রোডের নিস্তব্ধতা।

আমি রাকিবুল।
আমি শুধু লিখি না,
জীবন বুনে যাই শব্দের জালে।