শীত প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিলো আর শেষের শীতের হাওয়া খুবই রোমাঞ্চকর
কুয়াশার তেমন তীব্রতা ছিলো না সেদিন, কোন শঙ্খচিলের ঠোকরেও পড়িনি
জীবন জীবনের মত উপভোগের ছিলো
তবে লোকমুখে শুনেছিলাম পৃথিবীর নাকি করুন অবস্থা, অবিশ্রান্ত পরিশ্রম করে সবাই যেন পালিয়ে যেতে চাইলো
এ আর নতুন কি! আমার জন্মই হলো কয়দিন আর বাঁচবই ক'দিন
কোন শিকারীর খাদ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত জীবনকে উপভোগ করলাম।
শিশির ভেজা ঘাসে গা এলিয়ে দিলাম কঙ্কালের মত
খোলস ছাড়ানো সাপের মতো এগিয়ে গেলাম সামনের প্রান্তরে
পৃথিবীকে প্রশান্ত মহাসাগরের মত ঢেউ ভেবে আরো এলিয়ে পড়লাম মানুষের দেয়ালে,
এথেন্স এর মত দর্শন চর্চায় মেতে উঠলাম আমি নিজেই
জ্ঞান আর জ্ঞানের সানিধ্যে হয়ে উঠতে লাগলাম কবি আর তার তীব্রতায় হয়ে উঠলাম বড্ড উন্মাদ,
আমার সজাতিরা আমাকে সাবধান করেছিল,
পাখি কিংবা অন্যের পেটে যাওয়া ঘাসফড়িং তোর আবার কবিতা
তবুও আমি সেদিন লিখেছলাম
" গাঢ় রৌদ্দুরে দূর্বার গতি
আছড়ে পড়া বিদ্রোহ তব সঙ্কায় জাতী
নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক অসুখ
বিল্পবী সংগ্রামী সৈনিক
রেডিও তরঙ্গ নেটওয়ার্ক টাওয়ার
ডাষ্টবিনের পাশে ফেলে যাওয়া মানুষের মস্তিষ্ক
ধুলিস্যাৎ এর আস্তাবলের ধুলো আবরিত মরা ঘোড়া
রক্ততেজ আর সঙ্কোচ নেই বলেই সে বেঁচে আছে
অসারত্ব আমরণ আঘাতের চিহ্ন শরীর ছেয়াড়া
উন্মাদনা অস্থির কল্যাণের আবেদন
আমরণ অনেষ্বন আর মৃত্যুর বরণ
নব উল্লাস উন্মাদ কবি
দাবানলের হ্নদয়ে উদর ভরে উঠে নরক লোভী
বঞ্চিত কবিতা থেকে আমি হয়ে ঘাসফড়িং
জীবন কয়দিনের যার সাধনের কবিতার মহামারীর
নরকের ছেয়ে যদি উত্তম হয় মহামারী। "
এরপর আর কবিতা লিখার সুযোগ হলো না, কারা যেন হাইড্রোজেন বোমার আবিষ্কার করে ফেল্লো
আর তার দরুন প্রতিক্রিয়ায় নাকি পৃথিবীর মৃত্যু ঘটবে তাহলে আজকেই কি আমার শেষ কবিতা
নাকি আমার মৃত্যুর পর কংকাল সাজানো কোন দস্যুবাহিনী আসবে
আর আমাদের নিয়ে গড়ে তুলবে বোমার আরো গভীর আত্মা
আমার আফসোস হলো জোনাকিদের জন্য,যাদের আলো পেতে আমি রাত জাগতাম
তবে এতগুলো জোনাকির আলো যদি ধ্বংস হয়ে যায় তবে পৃথিবী কি আর আলোর মুখ দেখবে?
হঠাৎ বিকট শব্দ হলো, ধেয়ে আসছে বোমার হ্নদয় আর তার ভেতরের মৃত্যুর দৈত্য
সূর্যকে আড়াল করে পৃথিবীকে অন্ধকারচ্ছন্ন করে তুলছে আমার চোখের সামনেই
সকলেই পালিয়ে যাচ্ছে তাদের জীবন কে বাঁচিয়ে রাখতে
অথচ আমি জানি তারা আর কোনদিন বেঁচে উঠতে পারবে না
যেমন পারেনি নিজেকে ঈশ্বর দাবী করা ফারাও'রা
যেমন খোলস ছড়ানো সাপ আর কখনো সেই খোলসে আবদ্ধ হতে পারে না;
আমি কাউকেই কিছু বললাম না, কেননা আমি নিজেই নিজেকে বলতে লাগলাম
"সানিধ্য মৃত্যুর অবকাশ থেকে আমি আরো দূরে সরে যাচ্ছি
আমাকে আমার জন্য হলেও ভালোবেসো
ওহে সকল অনাগত'রা
আমি তোমাদের জন্য কবিতা রেখে যাচ্ছি
আমার কবর নেই বলে আমাকে অদৃশ্য ভেবো না
আমিও ছিলাম যেমন ছিল ঝড়ের আকাশে আকস্মিক বিপর্যয়
অনন্তসুখ খুঁজতে তোমার পৃর্বরা নিজেদের মৃত্যু পেয়েছে
অথচ আমি শুধুই বাঁচতে ছেয়েছিলাম
তবুও তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের অংশ হলাম;
আমি খুব কাছ থেকে ধ্বংস দেখেছি
কিভাবে তারা তাদের মস্তিষ্কের চাপায় পড়ে যাচ্ছে
নিস্পাপ গাছগুলো তাদের পায়ের মাটি ধরে রাখতে পারে নি;
অতপর এক কবি আসবে যার কবিতায় আমার আত্মকথা লিখবে;
এরপর আমার মৃত্যু হলো।