অনন্তকাল যে মোমের অন্ধকারে আমাকে রেখেছিলে সূর্যের ছোয়া না পেতে
সেই মোম গলে গলে জড় হয়েছে আবার জ্বলে উঠতে
রাতের গভীরে আমার জন্য যেই কবর খুঁড়ে গিয়েছিলে
সেই কবরের সন্ধানে আমি প্রেতাত্মা'দের সাথে নিজেকে বদল করে নিয়েছি
আমি খুজে পেয়েছি শুধু কবর আর কবর, তাহলে আমি কতবার জন্মেছিলাম?
আর কেনই'বা প্রত্যেক জন্মে আমাকে হত্যা করেছিলে? আর খুঁড়েছিলে আলাদা কবর
তোমরা যে মাতৃভূমি'কে পুড়িয়ে পুড়িয়ে দালান গড়ছো, সেই আগুন যে নরকে'র
যারা নরকের অমৃত স্বাদ পাবার লালসায় জ্বলছে আর জ্বলছে
আর সেই নরক লোভী আগুনের দেয়ালে বন্ধি হয়ে বেঁচে আছো তোমরা
আর উজ্জল সমাজের নামে গড়ে তুলছো শয়তানের কারখানা।
তোমাদের ভয়ংকর লোভ রাত জেগে থাকা'র লোভ
যেমন লোভে মরুর বালুতে কংকাল হয়ে যেত দার্শনিকদের দেহ
আর তার কংকাল নিজের শবে'র প্রতি হয়ে উঠতো হিংস্র
পচনশীল মাংসে কীটপতঙ্গের সর্বনাশা খাদ্য, আর শকুনের পাল ধেয়ে আসতো লোভে
যেমন লোভী সিগারেট নিজেকে জ্বালিয়ে ধোঁয়া হয়ে তোমাদের ফুসফুসে যায়গা করে নেয়
আর হয়ে উঠে নরক পিপাসু আগুন আর মৃত্যু পিপাসু ক্যান্সার
যেমন লোভী প্রেমিক'রা হয়ে উঠে শয়তান তার প্রেমিকা'র দেহের লোভে
প্রেমিকাদের খোড়া কবরে ঝাপ দেয় অনন্তকালে'র জন্য কংকাল হয়ে যেতে
প্রেমের তীব্র যন্ত্রণায় নিজেরা হয়ে উঠে প্রেমিক, ভালোবাসা'র লোভে একের পর এক কবর পাড়ি দেয়
যেমন লোভী কবিরা তাদের কবিতা মায়বীনীদের কণ্ঠে শুনতে।
অনেক সময় আমি কানে তুলো দিয়ে শুয়ে থাকি
পৃথিবীর সহস্র শব্দের থেকে দূরে থাকতে, আর শকুন'রা ভাবে আমি মারা গেছি,
দলে দলে ছুটে আসে আমার ভোজনে, আমি তাদের সাথে বারবার প্রতারণা করি
সৈনিকরা যেমন প্রতারকের মত যুদ্ধকরে নিজেদে'র স্বাধীন করতে
স্বাধীনতার লোভে তারা একে'র পর এক হত্যা করে আর লাশের জন্য গড়ে তোলে মহা-কবর
প্রেতাত্মাদের অরক্রেষ্টা'য় ধ্বনি তোলে রাতের অন্ধকারের
যেখান থেকে আরো গভীর অন্ধকার কিনে আনা যায়
যেমন অন্ধকারে পরিত্যক্ত গুহা, আর তার ভেতরে মহা-অসু'খেরা
অন্ধের চোখের গভীরের মত অন্ধকার আর তার দৃষ্টি' খুঁজে পাওয়া'র মত লোভ
যেমন ক্ষুদার্ত ভিক্ষুক আর রাস্তা'র পাশের অনাথেরা।
রাত অনেক গভীর হলো, আর পাশের কারখানা থেকে মানুষের চিৎকার ধেয়ে আসছে
কেউ যেন বন্ধি করে রেখেছে হাজারখানেক মানুষদের
"আমি তোমাদের মত খুনি নই, আমাকে চিনতে আসো
আমার হ্নদপিণ্ডে প্রেমের কবর আর কংকাল
আমি আমার মতও নই, আমি পিরামিডের মত
যার ভেতর অসংখ্য ফারাওদের মমি আর বাহিরে সব পাথর"
এমন করে ভাষণ দিচ্ছিলো বরফের ভেতরের শবে'রা
আর আমি পুড়ছি আর ধীরে ধীরে শয়তান হয়ে যাচ্ছি
অস্পষ্ট ছায়াদের ভীড়ে এক অন্ধ তোমাদের পথ দেখাচ্ছে,আর তোমরা এগোচ্ছে নরকে
নরকের লোভী আগুন কিভাবে বুঝবে তোমরা ভুল পথে এসেছো
তার লালায় অনন্ত আগুনের মহা-স্বাদে নরকে পুড়বে আর পুড়বে
আমি কাকে দোষী করবো?
তোমরা যারা নিজের চোখ বিক্রি করে উদ্যানের মালিক হতে ছেয়েছিলে তাদের
রাত যতই অন্ধকার হয় তোমরা ততই লোভী হয়ে উঠো, রাতের গভীরে যাওয়া'র লোভে।
আমি রাতের গভীরে গিয়েছিলাম, হাজার বছর ধরে সেই রাতের অন্ধকারে পথ ভুলতে
বিশ্বাস করো সেখানে কিছুই নেই, শুধু প্রেমিকা'দের খোঁড়া কবর আর প্রেমিক'দের কংকাল
কিছু প্রেমিক ভীষণ রকমের শয়তান হয়ে আছে, তারা প্রেমের আগুনে পুড়া'র অমৃত স্বাদ কাউকে দিচ্ছে না
তারা কালাশনিকভের মত সাতচল্লিশ এর অস্র বানাতে সেখানে তৈরী করে রেখেছে পেন্টাগন
আর তারা প্রেমের নরকের আগুনে পুড়ছে আর মস্ত বড় শয়তান হয়ে যাচ্ছে
সেসব শয়তান'রা আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো কিন্তু
আমরা মরে গেলে প্রেমিকা'দের নতুন কবরে ঝাপ দিবে কে?
নরকে'র মত লোভী আগুন কিভাবে আমাদে'র হ্নদয়ে জ্বালাবে?
জাহাজীর মেয়ে এসেছিলো আমার কাছে, এক ভয়ংকর সুন্দরী
পড়নে সাবলিল গ্রাউন আর অট্টালিকা সমান মুখে হাঁসি
কিন্তু একি, তার মুখের পাশে রক্ত লেগে আছে
চোখ দু'টো ভীষণ কালো, প্রচন্ড অন্ধকারে যেমন কালো হয় চাঁদ বিহীন অমাবস্যার রাত
যেন সব অন্ধকার তার চোখের থেকেই জন্ম নিচ্ছে আর পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে
তার চোখ দু'টো এতই কালো যেন অন্ধকারও পথ হারাবে তাতে
আমি তাকে বললাম, " এত কুৎসিত চোখ দিয়েও কি পৃথিবীকে সুন্দর দেখায়"?
সে বলল "পৃথিবী আবার হাসবে, রোদের আলোতে বয়ে আনবে সুখ আর শান্তি,
সূর্যের অন্ধকারে আর কোন প্রেমিক কাঁদবে না"।
আমার ভেতরে এত অব্যক্ত কথা আর এত অতৃপ্ত প্রেতাত্মা বলেই আমি কবি,
হ্যাঁ আমি কবি তোমাদের সমাজের লালা,
আমি লোভী, আমি নরক, আমি প্রতারক
আমি পৃথিবীর মৃত্যু'র জন্য লোভী
যেমন লোভী আকাশের হ্নদয় আর রাতের গভীর যা তোমাদের সব দীর্ঘনিশ্বাস খেয়ে ফেলে
আর যেমন প্রতারণায় শয়তান তোমাদের নিয়ে যাবে নরক
আর মরুর মরীচিকা যেমন প্রতারণায় দেখায় অদূরে কোন উজ্জ্বল প্রাণ।
তোমার প্রেম সেই প্রতারণা যা প্রেমিকদের ফেলে দেয় গহিন কবরে
আর সেই কবরের ভেতর কত শত প্রেমিকদের কংকাল আর তাদের জ্বলন্ত প্রেম
তবে তুমি কতবার সেই প্রেমে প্রতারণা করেছিলে? আর কতবার প্রেমিকদের নিয়ে এসেছিলে এই গহিন কবরে?