আমার সম্মুখে কিছু প্রাণী ঘুরে বেড়ায়
প্রাণীগুলো দেখতে ঠিক মানুষের মতো
তাদের হাঁটাচলা, হাত, পা, আঙুল, চোয়াল, কেশবিন্যাস
গলার স্বর, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ সবকিছুই মানুষের মতো।
অবয়ব দেখে মানুষ নামের শ্রেষ্ঠ প্রাণী থেকে
তাদের ‍পৃথক করার কোনো উপায়ই নেই।
মানুষের অবয়বে বেড়ে ‍ওঠা সভ্য আকৃতির প্রাণীটিকে
মানুষ না বলার কোনো যৌক্তিকতাও খুঁজে পাই না।
কিন্তু ইদানিং স্বপ্নভ্রষ্টের মতো কিছু অযাচিত উৎপাত
আমার চোখের দৃষ্টিকে এলোমেলো করে দিচ্ছে।
যাকে এতোদিন মানুষ বলে জেনেছি ও দেখেছি
তাদের আঙুলের নখের নিচে হিংস্র পশুর থাবা
সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো ঘাপটি মেরে বসে আছে।
তাদের দাঁতের সুবিন্যস্ত বিন্যাসের আড়ালে
নির্মম হায়েনার তীক্ষ্ণ দাঁত মরণ কামড়ের প্রত্যাশায় সদাপ্রস্তুত।
তাদের চুম্বনের উষ্ণ উত্তাপের ছায়ায়
কমোডো ড্রাগনের বিষাক্ত লালা প্রবল আমোদে বিরাজমান।
তাদের চোখের অবুঝ চাহনির মিথ্যে মরীচিকায়
ধূর্ত শেয়ালের লোভাতুর চোখের আইরিশের বর্ণিল ঝলকানি।
তারা দু’পায়ে হাঁটলেও তার সাথে দু’টি শূকরের পা-ও
পায়ে তাল মিলিয়ে হাঁটে।
তাদের মস্তিষ্কের নিউরনে দানবের নিউরনের সরব উপস্থিতি
তাদের হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে শকুনের রক্ত প্রবাহিত
তাদের মসৃন ত্বকের নিচেই অভিশপ্ত অসুরের মাংসপিণ্ড
তাদের হাতের নিপুন ছোঁয়ার অন্তরালে বর্শার ফলা শাণিত।

তাদের বাচনভঙ্গির সাথে অঙ্গভঙ্গির চুলচেরা বিশ্লেষণ করেও
মানুষ নামের প্রাণীর সাথে তাদের মেলাতে পারি না।
তবে কি আমি ভ্রমে বাস করছি নাকি
ভুল বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছি
প্রশ্ন থেকে যায়
মানুষ নামের প্রাণীগুলোর মাঝে ঐসব কারা
যাদের আমরা মানুষ নামেই চিনি।