ও মানুষ, চলো সবাই বৃক্ষসম হই
পরের মাঝে বিলাই জীবন, আপন নামে রই।
পাতা দিয়ে শাখা দিয়ে অন্যে দানে ছায়া
ব্যজন দিয়ে ছড়িয়ে দেয় ভালোবাসার মায়া।
ফল ও বীজে যুগিয়ে যায় অন্নহীনে খাবার
পুষ্টিহীনে পুষ্টি দিয়ে কর্ম করে বাবার।
কান্ড দিয়ে শাখা দিয়ে যোগায় আবাসন
কয়লা হয়ে রান্নাবান্নায় যোগায় হুতাশন।
শিঁকড় হয়ে রক্ষা করে সাগর নদীর কুল
মন রাঙিয়ে রঙিন করে বৃক্ষের রাঙ্গা ফুল।
শুধু কি তাই? বৃক্ষ-পুষ্প সুবাস ছড়ায় কত
মধু দিয়ে কাছে টানে মধুকরে শত।
ফুলের মালায় নিত্য গড়ে অযুত প্রেমের বন্ধন
সবার মুখে হর্ষ ফোটায় তরুর ফুল ও চন্দন।
তাহার শাখা-কান্ড-মূলে ওষুধ রহে অপার
পীড়িতকে জীবন দানে পথ্য দিয়ে অবার।
সকল জীবে বাঁচিয়ে রাখে দিয়ে অম্লজান
শত বলেও শেষ হবে না বৃক্ষরাজির দান।
তুফান হতে বাঁচায় বৃক্ষ শির বানিয়ে ঢাল
ওষুধ-পথ্য যোগায় তরু বিলিয়ে আপন ছাল।
আপন দেহের রস বিলিয়ে ভরে অন্যের মন
পরের তরে নরের তরে এটাই তাহার পণ।
বহু উর্ধ্বে উঠেও নজর দেয় মাটিরই দিকে
ফলের ভারে নুয়ে গিয়ে, দর্প করে ফিঁকে।
আত্নদেহে স্থান করে দেয় শত পরগাছায়
আপন কায়া বলি দিয়ে অন্যকে সে বাঁচায়।
মরে গিয়েও মাটির মাঝে মিশে যাবার ফলে
অন্য গাছে সার যুগিয়ে যায় সে পলে পলে।
এমনে করে জীবনচক্রের শুরু হতে শেষে
আপন জীবন বিলিয়ে দেয় পরেরই উদ্দেশ্যে।
নিজের কোন স্বার্থ নাহি, শুধুই পরের তরে
শুধু তাহার নামটি রহে, ফলের মাঝে ধরে।